মার্কিন সরকারে শাটডাউন চলছে, এখন কী হতে পারে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:১৩ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবন। ছবি: এএফপি।

মার্কিন সরকারে চলছে শাটডাউন। কারণ রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটরা বাজেট বিল নিয়ে একমত হতে পারেননি। এর ফলে অনেক সরকারি সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে এবং প্রায় ৭.৫ লাখ সরকারি কর্মচারী বিনা বেতনে ছুটিতে রয়েছেন।

যদিও বাজেট নিয়ে দ্বন্দ্ব মার্কিন রাজনীতিতে নতুন নয়, তবে এবার পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ, কারণ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের আকার কমানোর পক্ষে রয়েছেন এবং শাটডাউনকে তিনি সম্ভবত আরও কাটছাঁট করার সুযোগ হিসেবে দেখছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বাজেট বিল পাস না হলে সরকারি ব্যয় চালানো সম্ভব নয়। এই ক্ষেত্রে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটরা অক্টোবর মাস ও তার পরের সময়ের জন্য বাজেট পাস করতে পারেননি।

রিপাবলিকানরা কংগ্রেসের দুই কক্ষই নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু সিনেটে ৬০ ভোট না থাকায় বাজেট পাসে ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন দরকার হয়।

ডেমোক্র্যাটরা চান স্বাস্থ্য বিমা সহজলভ্য করতে করছাড়ের মেয়াদ বাড়ানো হোক এবং মেডিকেইডে ট্রাম্পের কাটছাঁট বাতিল করা হোক।

একটি সাময়িক বিল হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস (নিম্ন কক্ষ) পাস করলেও, তা সিনেটে আটকে যায়।

এভাবে, ১ অক্টোবর রাত ১২টা ১ মিনিটে (স্থানীয় সময়) যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় সাত বছর পর প্রথমবারের মতো সরকার আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

তবে শাটডাউনের মধ্যেও চালু আছে সীমান্ত সুরক্ষা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা (আইসিই), হাসপাতালের জরুরি সেবা, সোশ্যাল সিকিউরিটি ও মেডিকেয়ারের চেক পাঠানো

এদিকে শাটডাউনের কারণে অসংখ্য ফ্লাইট বাতিল বা দেরি হচ্ছে (এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের ঘাটতির কারণে)। বন্ধ রয়েছে সিডিসি ও এনআইএএচ-এর গবেষণা কর্মসূচি। খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি ও সরকারি অর্থায়নে চলা স্কুল/প্রিস্কুলও বন্ধ।

ন্যাশনাল পার্কগুলো আংশিকভাবে চালু, তবে সীমিত রয়েছে পরিষেবা। অনাবশ্যক কর্মচারীদের বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। কনট্রাক্টররাও কাজ পাচ্ছেন না।

আগের শাটডাউনগুলোর মতো এবারও রাজনৈতিক ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি থাকলেও, ট্রাম্প প্রশাসন অনেকটা আগ্রহের সঙ্গেই শাটডাউন চালিয়ে যাচ্ছে।

ট্রাম্প সরকার গত ৯ মাসে অনেক খরচ কমিয়েছে ও কর্মী ছাঁটাই করেছে। ট্রাম্প বলেছেন, অনেককে স্থায়ীভাবে ছাঁটাই করা হবে।

এখন কী হবে? শাটডাউন কতদিন চলতে পারে? এর নির্দিষ্ট সময় নেই। সম্ভবত দুই দলের মধ্যে কোনো আপোসের মাধ্যমে এর সমাধান হতে পারে।

রিপাবলিকানরা ডেমোক্র্যাটদের স্বাস্থ্য সহায়তা দাবি মেনে নিলে চুক্তি হতে পারে। আবার শাটডাউন এত বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে যে, ডেমোক্র্যাটরা সাময়িকভাবে পিছিয়ে গিয়ে সরকার সচল করতে রাজি হতে পারে।

এখন পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসন ছাড় দেওয়ার কোনো ইঙ্গিত দেয়নি। তারা মনে করে জনগণ ডেমোক্র্যাটদেরই দায়ী করবে। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটরা জনগণের পক্ষে সস্তা স্বাস্থ্যসেবার দাবি করছে।

অর্থনীতিতে প্রভাব কতটা?

বিশ্লেষকদের মতে, শাটডাউন চললে প্রতি সপ্তাহে ০.১ থেকে ০.২ শতাংশ হারে জিডিপি কমতে পারে। যদিও শাটডাউন শেষ হলে অনেকটা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব।

তবে, যদি ট্রাম্প স্থায়ীভাবে ছাঁটাই করেন বা কর্মীদের বেতন না দেন, তাহলে প্রভাব আরও মারাত্মক হতে পারে।

অর্থনীতি এরই মধ্যে ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পরিসংখ্যান বিলম্বের কারণে চাপে আছে।

সূত্র: বিবিসি

এমএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।