নির্বাচন আজ : তৃতীয় মেয়াদও কি রাজাপাকসের?


প্রকাশিত: ০৩:৪৩ এএম, ০৮ জানুয়ারি ২০১৫

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। এ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে টানা তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হতে পারেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এএফপির বিশ্লেষণে এ তথ্য জানা গেছে।

তামিল বিদ্রোহীদের চূড়ান্তভাবে দমন এবং দেশকে উন্নয়নের পথে চালিত করার কারণে সিংহলিদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা বেশ ভালোই। কিন্তু রাজাপাকসের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে দুটি ঘটনা। এক. চূড়ান্ত পতনের প্রায় ছয় বছর পরও নির্বাচনের আবহে ফিরে এসেছে তামিল বিদ্রোহীদের প্রেতাত্মারা! আর দুই নম্বরে `ঘরের শত্রু বিভীষণ` হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন তাঁরই সরকারের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাইত্রিপালা সিরিসেনা।

এ ছাড়াও দুর্ভাবনার কথা হলো, রাজাপাকসে ও সিরিসেনা উভয়েই সিংহলি সম্প্রদায়ের মানুষ। সুতরাং রাজাপাকসে বিপাকে পড়তে পারেন। আজকের নির্বাচনের জয়-পরাজয় নির্ধারণে তামিলরাসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ হয়ে উঠতে পারে তুরুপের তাস।

সংখ্যাগুরু সিংহলি এবং সংখ্যালঘু তামিলদের মধ্যে তিন দশকের লড়াইয়ের জেরে দেশটির রাজনৈতিক বিভাজন খুবই প্রকট। ২০০৯ সালের মে মাসে সেনাবাহিনীর অভিযানে চূড়ান্তভাবে পতন ঘটে স্বাধীনতাকামী তামিল বিদ্রোহীদের (এলটিটিই)। কিন্তু রাজাপাকসে নিজেই এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় এলটিটিইর পুনরুত্থানের আশঙ্কার কথা চাউর করেছেন। এই জুজুর ভয় দেখিয়ে ভোটারদের নিজের পক্ষে ধরে রাখতে চান রাজাপাকসে। অথচ ২০০৯ সালের পর এলটিটিইর কোনো তৎপরতাই কারো চোখে পড়েনি।

কলম্বভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ন্যাশনাল পিস কাউন্সিলের জেহান পেরেরা বলেন, প্রেসিডেন্ট মনে করেন, এলটিটিই প্রসঙ্গ সিংহলিদের তাঁর পক্ষে ভোট দিতে প্রভাবিত করবে। তবে এ নিয়ে এতই প্রচার-প্রচারণা চলছে যে মানুষের পক্ষে কোনটি সত্য আর কোনটি মিথ্যা তা নির্ধারণ করা দুরূহ হয়ে পড়বে।

বিশ্লেষকদের ধারনা, রাজাপাকসে  নিজের ব্যর্থতা ঢাকতেই এলটিটিই প্রসঙ্গ টেনে তুলছেন। জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বাধীন বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপসহ নানা কারণে রাজাপাকসে সমালোচিত। এ কারণে তামিলরা ও মুসলমান সম্প্রদায়ের বেশির ভাগ মানুষই তাঁর শাসনের অবসান চায়। তামিলরা মনে করে, তারা ক্ষমতাসীন সিংহলি ও বৌদ্ধদের শাসনের ফলে ক্রমেই প্রান্তিক অবস্থানে চলে যাচ্ছে। আর মুসলমানদের ওপর কট্টর বৌদ্ধরা বেশ কয়েক দফা হামলা চালানোর পরও রাজাপাকসে সরকার তার প্রতিকারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

অপরদিকে, জনসাধারণের কাছে সিরিসেনা রাজপাকসের মতো `গ্লামারাস` নন ঠিকই, কিন্তু কৃষক পরিবারের সন্তান সিরিসেনার প্রতি জনগণের একটা অংশের জোরালো সমর্থন রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো-তিনি ক্ষমতায় এলে কী পরিবর্তন ঘটবে? নির্বাচনী ইশতেহারে সিরিসেনা দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনা এবং সাংবিধানিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সিরিসেনা অবশ্য ইশতেহারে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠা বা জাতিগত বিরোধের কোনো রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলেননি। আবার যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের বিচার করার সম্ভাবনাও বাতিল করে দিয়েছেন।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।