মুকসুদপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে পৃথক দুইটি সংঘর্ষে একজন নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে উপজেলার মোচনা ইউনিয়নের নওহাট এআরএম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এবং সকাল ১১টায় ডিগ্রি কলেজে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত রাজ্জাক শেখ (৩৫) ধোপাদী গ্রামের বাদশা শেখের ছেলে।
আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, সকাল ১০টার দিকে উপজেলার মোচনা ইউনিয়নের নওহাট এআরএম উচ্চ বিদ্যালয়ের ফুটবল দলের খেলোয়াড় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা। সংঘর্ষে যুবক রাজ্জাক শেখ নিহত হন। এছাড়া আরো অন্তত ২০ জন আহত হন।
ওই বিদ্যালয় মাঠে আটটি বিদ্যালয়ের মধ্যে জাতীয় স্কুল-মাদ্রাসা মৌসুমী ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ ঘটনার পর ওই আটটি বিদ্যালয়ের প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলা বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পংকজ কুমার বিশ্বাস জানান, ওই মাঠে আটটি বিদ্যালয়ের মধ্যে জাতীয় স্কুল-মাদ্রাসা মৌসুমী ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু খেলা শুরু হওয়ার আগেই আমাদের স্কুলের দলের খেলোয়াড় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নওহাটা ও ধোপাদী গ্রামের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ খবর উভয় গ্রামবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা দেশিয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি জানান, শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনার পরপরই ওই স্কুল মাঠ দিয়ে ধোপাদী গ্রামের আবুল বশার ও রাজা শেখ হেঁটে যাচ্ছিলেন। তখন নওহাটা গ্রামের ছাত্ররা আবুল বশারের ওপর হামলা চালায়। এ সময় রাজা মিয়া ঠেকাতে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে আহত করে। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে রাজা শেখ মারা যান।
মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আমিরুল ইসলাম জানান, নিহত রাজা শেখ হাসপাতালে আসার আগেই মারা গেছেন। বাকিদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
অপরদিকে, সকাল ১১টার দিকে মুকসুদপুর ডিগ্রি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্লাস রুমে বসা নিয়ে ওই উপজেলার কমলাপুর ও প্রভাকরদি গ্রামের ছাত্ররা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। আর এরই জের ধরে তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
মুকসুদপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওই এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষে নিহত রাজা শেখের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এস এম হুমায়ূন কবীর/এআরএ/এমআরআই