জনসনের টিকায় রক্তজমাট বাঁধার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই বিরল
জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনা টিকা থেকে রক্তজমাট বাঁধার ঝুঁকি খুবই কম বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-ইএমএ। তাই এই উপসর্গকে খুবই বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ধরে নেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
ইএমএ এর আগে জনসন অ্যান্ড জনসনের কোভিড-১৯ টিকার সঙ্গে রক্তজমাট বাঁধার উপসর্গের সম্ভাব্য যোগসূত্র খুঁজে পাওয়ার কথা জানিয়েছিল। তবে এবার তারা জোর দিয়েই বলছে, জনসনের টিকা নেয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকির চেয়ে উপকারই অনেক বেশি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে জনসনের টিকা নেয়া ৭০ লাখেরও বেশি মানুষের মধ্যে মাত্র আটজনের দেহে রক্তজমাট বাঁধার এই বিরল উপসর্গ দেখা গেছে। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ইএমএ এই রক্তজমাট বাঁধার ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করছে।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) ইএমএ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘রক্তজমাট বাঁধার উপসর্গকে জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার খুব বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তালিকাতেই রাখা উচিত। যুক্তরাষ্ট্রে রক্তজমাট বাঁধার ঘটনাগুলো ঘটেছে টিকা নেয়ার তিন সপ্তাহ পর ৬০ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে। তাদের বেশির ভাগই ছিল নারী।’
তারা আরও বলেছে, ‘রক্তে প্লাটিলেট কম থাকার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে রক্তজমাট বাঁধার সম্পর্ক এর একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হতে পারে। কিন্তু কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে মানুষের শরীরে রক্তজমাট বাঁধার ঝুঁকি যতটা বেশি, টিকা গ্রহণের কারণে সেটা হওয়ার ঝুঁকি তার চেয়ে অনেক কম।’
এর আগে রক্তজমাট বাঁধার কয়েকটি ঘটনা সামনে আসায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষও দেশটিতে জনসন অ্যান্ড জনসনের কোভিড-১৯ টিকা স্থগিত রাখার পরামর্শ দিয়েছিল। যার জেরে গত সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ আফ্রিকা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকাদান কার্যক্রম স্থগিত করে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ইএমএ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার বিষয়েও একই ধরনের পরামর্শ দিয়েছিল। ওই সময়ে ইউরোপে আড়াই কোটির বেশি মানুষকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮৬ জনের শরীরে রক্তজমাট বাঁধার বিরল উপসর্গ দেখা দেয়। পরে যুক্তরাজ্য সরকার ৩০ বছরের কম বয়সীদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া বন্ধ করে দেয়।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই টিকার সম্ভাব্য ঝুঁকির চেয়ে টিকা নিয়ে নিজেকে সুরক্ষিত রাখাটা বেশি ভালো। আর যেকোনো অনুমোদিত চিকিৎসা কিংবা টিকারই কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে।
এমআরআর/এমকেএইচ