বিক্ষোভের মুখে করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করছে চীন
টানা কয়েকদিনের মতো করোনা বিধিনিষেধ বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে চীন। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের জিরো কোভিড নীতির বিরুদ্ধে একাট্টা দেশটির সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী বেইজিং, সাংহাই, উহান, চেংদু ও উরুমকিতে। অবশেষে করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করার খবর মিলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, শিগগির করোনা নিয়ন্ত্রণে কোয়ারেন্টাইন প্রোটোকল সহজ করার ও গণপরীক্ষা হ্রাস করার ঘোষণা দিতে পারে চীন। বিক্ষোভের কারণে জিরো কোভিড নীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনছে শি জিনপিংয়ের সরকার।
করোনা মহামারি ৩ বছরের কাছাকাছি হলেও এখনও চীনে হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। করোনাভাইরাস সংক্রমণ গত কয়েকদিনে কয়েক দফা বেড়ে গেছে দেশটিতে। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং প্রদেশের একটি আবাসিক ভবনে সম্প্রতি আগুন লেগে ১০ জন নিহত হওয়ার জেরে বিধিনিষেধ বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সপ্তাহজুড়ে দেশটির বাণিজ্যিক হাব সাংহাইসহ বিভিন্ন শহরে চলছে বিক্ষোভ। রাস্তায় নেমে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন করোনা বিধিনিষেধ বিরোধীরা। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে এতো বড় বিক্ষোভ হতে দেখা যায়নি দেশটিতে, বলছেন চীনা বিশ্লেষকরা।
চীনের গুয়াংঝুর স্বাস্থ্যসেবা কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভের কথা উল্লেখ না করে বিধিনিষেধ শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছে। মঙ্গলবার গুয়াংঝুতে সহিংস বিক্ষোভের ২৪ ঘন্টারও কম সময়ে, সাতটি জেলার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা অস্থায়ী লকডাউন তুলে নিচ্ছে। একটি জেলার পক্ষ থেকে জানানো হয়, এটি স্কুল, রেস্তোঁরা এবং সিনেমাসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আবারও খোলার অনুমতি দিচ্ছে। চংকিং ও ঝেংঝোসহ আরও বিভিন্ন শহরে বিধিনিষেধ সহজ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গণ পরীক্ষা ও নিয়মিত নিউক্লিক অ্যাসিড পরীক্ষার ব্যবহার হ্রাসের পাশাপাশি শনাক্ত হওয়া রোগী ও ঘনিষ্ঠ পরিচিতিদের নির্দিষ্ট শর্তে বাড়িতে আলাদা করে রাখার অনুমতি দেওয়ারও পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এতে।
মাত্র একজন করোনা রোগী শনাক্ত হলেও লকডাউন দেওয়াসহ নানা বিধিনিষেধে হতাশায় ভুগছিল চীনের বিভিন্ন শহরের মানুষ। গত সপ্তাহে সাধারণ মানুষের সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। বিক্ষোভে যোগ দিতে রাস্তায় নামে হাজার হাজার লোকজন। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও বাধে তাদের। আটকও করা হয় কয়েকজনকে।
চীনের মহামারিবিষয়ক উপপ্রধানমন্ত্রী সান চুনলান বলেছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়েছে। অনেক মানুষই টিকা নিয়ে ফেলেছেন এবং ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন। তার এমন মন্তব্যের পর কোভিড বিধিনিষেধ শিথিল করার এসব খবর পাওয়া যাচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি
এসএনআর/জিকেএস