প্রতি ফাইলেই ঘুষ নিতেন রাজিব, জবানবন্দি সহযোগী মাইনুদ্দীনের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:১৮ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ঘুষের টাকাসহ গ্রেফতার দুই রাজস্ব কর্মকর্তা/ছবি সংগৃহীত

ঘুষের টাকাসহ দুদকের ফাঁদ মামলায় হাতেনাতে গ্রেফতার চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) রাজীব রায় প্রতি ফাইলেই ঘুষ নিতেন বলে আদালতে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন একই মামলায় গ্রেফতার তার সহযোগী মাইনুদ্দীন।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফার আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি এ তথ্য দেন।

মাইনুদ্দীন বলেন, রাজীব রায়ের টেবিলে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি ফাইল থাকতো। ফাইল ঠিক থাকুক আর না থাকুক প্রতিটি ফাইল থেকে তিনি ঘুষ নিতেন। ঘটনার দিন (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজীব রায় আমাকে ডেকে নেন এবং তার ড্রয়ারে একটি টাকার খাম আছে বলে জানিয়ে তা আমার কাছে রাখতে বলেন। আমি যখন খামটি পকেটে ঢুকিয়ে নিই তখনই দুদকের টিম আমাকে ধরে ফেলে। গত ৪ থেকে ৫ মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই রাজীব তার ঘুষের টাকা আমাকে রাখতে দিতেন।

বিষয়টি নিয়ে আদালতে দুদকের পিপি মোকাররম হোসেন বলেন, আদালতে হাজির করা হলে ফাঁদ মামলায় গ্রেফতার মাইনুদ্দীন ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে রাজীব রায় ও মাইনুদ্দিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

আমদানিকারকের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের সময় রাজীব রায় ও মাইনুদ্দীনকে গত মঙ্গলবার হাতেনাতে গ্রেফতার করে দুদক। ফাঁদ অভিযান পরিচালনা করে কাস্টমস হাউসের দ্বিতীয় তলার শুল্কায়ন সেকশন-৭ (বি) থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

দুদক জানায়, হোমল্যান্ড প্লাস্টিক স্যু ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটর এবং মুন্সিগঞ্জের বাসিন্দা আমির হোসেন কারখানার পণ্য উৎপাদনের জন্য জাপান থেকে ৬ হাজার ৪২৮ মার্কিন ডলারের ব্রিক অ্যাক্রেলিক মিক্সড প্লাস্টিক অ্যান্ড স্ক্র্যাপ আমদানি করেন। আমদানিকৃত পণ্য পোর্ট থেকে ছাড়করণের জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দাখিল করা হয়। কিন্তু কাস্টমস হাউসের শুল্কায়ন সেকশন-৭ (বি)-এর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায় ও মো. ছারওয়ার উদ্দিন পণ্য ছাড়করণের জন্য তাকে নানাভাবে হয়রানি করেন।

একপর্যায়ে তারা আমির হোসেনের কাছে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। অন্যথায় পণ্য ছাড়ের ব্যবস্থা করবেন না এবং পণ্য পোর্ট ও কনটেইনার ডেমারেজপূর্বক নিলামে বিক্রির হুমকি দেওয়া হয়।

পুরো বিষয়টি জানিয়ে আমির হোসেন দুদকে অভিযোগ করেন। পরে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ গত মঙ্গলবার ফাঁদ মামলায় অভিযান চালিয়ে ঘুষের ৩০ হাজার টাকাসহ তাদের গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলা দায়ের হয়।

এমডিআইএইচ/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।