সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন

আইনজীবীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন, দাবি মোমতাজ উদ্দিনের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩৬ পিএম, ১৯ মার্চ ২০২৩

হট্টগোল, হামলা, ভাঙচুর, মামলা, সাংবাদিক পেটানো, প্রধান বিচারপতির কাছে নালিশ ও ধাক্কাধাক্কির মধ্যে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী নির্বাচন ‘একতরফা হয়নি’ বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। তিনি বলেন, আইনজীবীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। আর বিএনপি সমর্থিতরা ভোট বর্জনের ঘোষণাও দেননি।

রোববার (১৯ মার্চ) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় সমিতির সম্পাদক আবদুন নূর দুলালসহ আওয়ামী লীগ সমর্থিত কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচনে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য তিনি বিএনপির গণতন্ত্রবিরোধী, ভোটবিরোধী, নির্বাচনবিমুখ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন ও মো. রুহুল কুদ্দুসকে দায়ী করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলা হয়।

আরও পড়ুন: সব পদে আওয়ামীপন্থিদের নিরঙ্কুশ জয়

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, প্রচলিত বিধান অনুযায়ী ১৪ মার্চ সন্ধ্যায় আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুজ্জামান এবং সম্পাদক মো. আবদুন নূর দুলাল সমিতির কনফারেন্স রুমে বসে ব্যালট পেপার স্বাক্ষর করছিলেন। হঠাৎ করে দরজা ধাক্কা দিয়ে বহিরাগত লোকজনসহ সন্ত্রাসী কায়দায় খোকন এবং কাজল কনফারেন্স রুমে ঢুকে আহ্বায়ককে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। টেবিলের উপরে থাকা ব্যালট পেপার ছিনতাই করে কিছু ব্যালট পেপার ছিঁড়ে ফেলেন এবং কিছু ব্যালট পেপার নিয়ে জান। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ইতিহাসে এটি নজিরবিহীন এবং ন্যাক্কারজনক। এছাড়া ব্যালট পেপার তছনছ করেন এবং পায়ে মাড়িয়ে দলিত মথিত করেন খোকন এবং কাজল। ফলে নির্বাচনের পূর্ব রাতেই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটে।

আরও পড়ুন: থমথমে সুপ্রিম কোর্ট, পাঁচ শতাধিক পুলিশ মোতায়েন

নির্বাচনের দিন বিএনপিপন্থিরা ভাঙচুর চালিয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, ভোটগ্রহণ শুরু করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হলে খোকন এবং কাজলের নেতৃত্বে অনেক বহিরাগত সন্ত্রাসী ভোটের প্যান্ডেলে ঢুকে পড়ে এবং ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। অনেক আইনজীবীকে আহত করেন। তারা ভোট বর্জন করেছেন কি না সেটাও জানায়নি। তাদের বিকল্প প্রস্তাব কি তাও জানায়নি। তারা শুধু অযথা অকারণে ভাঙচুর ও হট্টগোল করতে থাকেন। এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ভোটগ্রহণ বিলম্বিত হতে থাকে এবং একটানা ভাঙচুর চলতে থাকে। এ অবস্থায় ভোটগ্রহণ শুরু এবং সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য আইনশৃ্ঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য গ্রহণ ব্যতীত কোন বিকল্প অবশিষ্ট ছিল না। ইতোপূর্বে সব নির্বাচনে আইনশৃ্ঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য গ্রহণ করা হয় এবং বর্তমান নির্বাচনেও পদত্যাগকারী আহ্বায়ক মো. মনসুরুল হক চৌধুরী সহায়তা চেয়ে চিঠি দেয়। এমনকি প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়ে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেন।

সাংবাদিকদের বিষয়ে বক্তব্যে বলা হয়, দুইদিন দায়িত্ব পালন কালে ঘটনার আকস্মিকতায় আপনারা কোনোভাবে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির শিকার হয়ে থাকলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছে এবং এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সামগ্রিক দায়ভার বিএনপির গণতন্ত্র বিরোধী, ভোট বিরোধী, নির্বাচন বিমুখ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। সামগ্রিক বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ সংযম, দায়িত্বশীলতা এবং গণতন্ত্রের প্রতি অবিচল অঙ্গীকারের পরিচয় দিয়েছি।

আরও পড়ুন: সংঘর্ষ-ভাঙচুর ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় উত্তপ্ত সুপ্রিম কোর্ট

এর আগে দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের শেষ দিন বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে ১৪টি পদের সব কটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়েছে। যদিও নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল বিএনপি সমর্থকরা।

এফএইচ/জেএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।