সন্তানকে বশে আনতে ‘জ্বীনের’ কাছে ৩৫ লাখ টাকা খোয়ালেন নারী
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় এক নারীর অবাধ্য সন্তানকে ‘বাধ্য’ করার নামে ভয় দেখিয়ে ৩৫ লাখ টাকার বেশি হাতিয়ে নেওয়া কথিত তান্ত্রিক চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন- মো. রাকিব মাতব্বর, মো. আলাউদ্দিন ব্যাপারী, মো. মহিউদ্দিন ব্যাপারী, মো. মানিক, মো. ফরহাদ হোসেন ও মো. মেহেদী হাসান। তাদের কাছ থেকে ১৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর জিগাতলা, রায়েরবাজার ও বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভোরে যশোর জেলায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) ডিএমপির রমনা বিভাগের নিউমার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. জাহাঙ্গীর কবির এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ১৯ আগস্ট দুপুরে এলিফ্যান্ট রোডের ভাড়া বাসায় অবস্থানকালে ভুক্তভোগী নারী ‘কোরআনিক শিফা’ নামে একটি ফেসবুক পেজে ‘অবাধ্য সন্তানকে বাধ্য করার উপায়’ শিরোনামের ভিডিও দেখেন। সেখানে দেওয়া নম্বরে ফোন করলে নিজেকে তান্ত্রিক হিসেবে পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি জানান, জ্বীনের মাধ্যমে তার সন্তানের সমস্যার সমাধান করা হবে।
প্রতারণার অংশ হিসেবে প্রথমে বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনার অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা বিকাশে নেন। এরপর হোয়াটসঅ্যাপে ‘কালো জাদু’র ছবি পাঠিয়ে কাজ চলছে বলে জানান। পরদিন পুনরায় ফোন করে ‘জ্বীন পরিচয়ে’ চক্রের একজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে শিশুটির ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয় দেখানো হয়। সমাধানের জন্য ৪৯ হাজার টাকা দাবি করা হয় ভুক্তভোগীর কাছ থেকে। সন্তানকে বিপদ থেকে রক্ষার আশায় তিনি পুনরায় টাকা পরিশোধ করেন। পরে একই কৌশলে ২১ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মোট ৩৫ লাখ ৪৪ হাজার ১০৫ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা।
এসি মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী ওই নারী প্রতারণা চক্রের খপ্পরে পড়েছেন বুঝতে পেরে নিউমার্কেট থানায় হাজির হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এজাহার নেওয়ার পর নিউমার্কেট থানার এসআই মো. ফিরোজ আহম্মেদ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে বুধবার সন্ধ্যায় হাজারীবাগ থানাধীন জিগাতলা-রায়েরবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে এবং বৃহস্পতিবার ভোরে যশোরের চৌগাছা থানার যাত্রাপুর এলাকা থেকে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
কেআর/এএমএ/বিএ