সিনোফার্মের টিকা তৈরির অনুমতি এখনো কোনো প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়নি
চীনের সিনোফার্মের কোভিড-১৯ টিকা উৎপাদনের জন্য দেশীয় প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসকে অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে যে খবর ছড়িয়ে পড়েছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। এ বিষয়ে বিবৃতিও দেয়া হয়েছে অধিদফতরের তরফ থেকে।
জানতে চাইলে রোববার (১৬ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘এমন কোনো অনুমোদন আমরা দেইনি। এটি ভুল নিউজ। এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।’
কারও কাছে তিনি এ ধরনের কোনো কথা বলেননি বলেও দাবি করেন।
সোমবার (১৭ মে) এ ব্যাপারে কোনো প্রেস কনফারেন্স আছে কি-না জানতে চাইলে মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সেইটা, আমি যতটুকু বললাম সেটুকুই বলেন’। এরপর তিনি মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
পরে এ বিষয়ে ঔষধ প্রশাসনের তরফ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এতে বলা হয়, ‘বিভিন্ন মিডিয়াতে এই মর্মে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে যে সিনোফার্ম কর্তৃক উৎপাদিত ভ্যাকসিন ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড কারখানায় উৎপাদনের নিমিত্তে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর কর্তৃক অনুমোদন দেয়া হয়েছে, যা সঠিক নয়। মূলত দেশে কোভিড-১৯ টিকা উৎপাদনের অনুমতি এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়নি’।
এর আগে দেশীয় ওষুধ উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসকে চীনের সিনোফার্মের টিকা উৎপাদনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ছড়ায়। দু-একটি গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। তাতে বলা হয়, চলতি মাস থেকে দেশেই সিনোফার্মের টিকা উৎপাদন শুরু হবে।
তবে ঔষধ প্রশাসনের মতো স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কে কিছুই জানে না তারা। রোববার সন্ধ্যায় অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলামের কাছে একই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি তারা (স্বাস্থ্য অধিদফতর) এখনো পাননি।’
তিনি বলেন, ‘ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন একটি পৃথক সংস্থা। তারা অনুমতি দিলে প্রথমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানাবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তারা জানতে পারেন।’ সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি ‘ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর’ জানিয়েছিল, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডকে টিকা উৎপাদনে অনুমতি দেয়া যায় কি-না তা প্রাথমিক সক্ষমতা যাচাইয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিকা সংগ্রহ ও বিতরণ বিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত কমিটি।
এছাড়া রেনেটা এবং ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস রাশিয়ার টিকা উৎপাদনের অনুমতি চেয়ে ঔষধ প্রশাসনের কাছে আবেদন করে।
এদিকে গত বুধবার (১২ মে) ভোর ৫টা ৩১ মিনিটে বিমান বাহিনীর (এস-৩এজিএফ) ফ্লাইটে চীন সরকারের উপহার হিসেবে দেয়া পাঁচ লাখ ডোজ টিকা কুর্মিটোলায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে পৌঁছায়।
রোববার দুপুর ২টায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনা পরিস্থিতি সংক্রান্ত ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘চীনের সঙ্গে সিনোফার্ম টিকার যে আলোচনা তা ফলপ্রসূভাবে এগিয়ে চলছে। এ মাসের শেষে কিংবা আগামী মাসের শুরুতে আশার খবর শোনাতে পারবো।’
এমইউ/এমআরআর/এইচএ/জেআইএম