জালাল ইউনুসের স্মৃতিচারণ
খেলোয়াড়ি জীবনে বেলাল ছিলেন অন দ্য ফিল্ড ‘আবাহনীর প্রাণ’
সদ্য প্রয়াত সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার মীর বেলায়েত হোসেন বেলাল ঠিক কবে আবাহনীতে যোগ দিয়েছিলেন, সে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন দুই জন; বেলালের বন্ধু ক্রিকেটার আনোয়ার ও আবাহনীর সাবেক ক্রিকেটার এবং সংগঠক জালাল ইউনুস।
বেলালের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জালাল বলেন, আমি আবাহনীতে যোগ দেই ১৯৭৭ সালে। যদিও আবাহনীর হয়ে খেলতে শুরু করি আরও আগে। মানে ১৯৭৬ সালে লিগ শেষে শহীদ স্মৃতি টুর্নামেন্ট খেলতে আবাহনীতে যোগ দেই। এমনিতে ওই বছর আমার ক্লাব ছিল ধানমন্ডি।
ধানমন্ডির হয়ে ঢাকা লিগ শেষ করে আবাহনীতে নাম লেখাই।
স্মৃতি হাতড়ে জালাল ইউনুস বলেন, ‘মনে আছে আবাহনীর হয়ে আমার প্রথম ম্যাচটি ছিল মোহামেডানের বিপক্ষে। তখন থেকেই আমি বেলালকে চিনি। আমরা এক সাথে আবাহনীতে বেশ কয়েক বছর খেলেছি। তার মতো অমায়িক, বিনয়ী আর হাস্যোজ্জ্বল ছেলে আমি খুব কম দেখেছি। আমি কখনই তাকে ভুলতে পারবো না। কোনো সময় তাকে গোমড়া মুখে দেখিনি। মনে হয় আমি তাকে হাসিখুশিই দেখেছি সব সময়। অনেক সময় আমরা ম্যাচে খারাপ অবস্থায় থাকলে বা হারতে থাকলে মনমরা থাকতাম। কিন্তু বেলাল কখনো হতোদ্যম হননি। সবাইকে চাঙ্গা রাখতেন।
জালাল ইউনুস আরও বলেন, ‘আলিউল ভাই (প্রয়াত আলিউল ইসলাম) আমাদের অধিনায়ক ছিলেন। কিন্তু তিনি বেলালের ওপর মাঠে খুব নির্ভর করতেন। বেলাল উইকেটের পেছন থেকে পুরো দলকে চাঙ্গা রাখতেন। ভারী শরীর নিয়ে তিনি যে স্প্রিন্ট দিতেন, চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন।
বেলালের সক্ষমতা নিয়ে জালাল ইউনুস বলেন, ‘৭০ দশকে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে যারা তুখোড় অ্যাথলেট হিসেবে পরিচিত, তাদের বড় অংশ বেলালের সঙ্গে শর্ট স্প্রিন্ট দিয়ে পারতো না। তিনি ছিলেন পুরোপুুরি ফিট। ৫০ মিটার স্প্রিন্টে ফার্ষ্ট হতেন। বয়সে আমার একটু সিনিয়র ছিলেন। কিন্তু তিনি খুবই বন্ধুভাবাপন্ন ছিলেন। খেলোয়াড়ি জীবনে বেলাল ছিলেন অন দ্য ফিল্ড আবাহনীর প্রাণ।
‘আমি আর দিপু রায় চৌধুরী তখন বোলিংয়ে ওপেন করতাম। ফার্ষ্ট চেঞ্জে আসতো আজম। কখনো উইকেট না পেলে বেলাল উইকেটের পেছন থেকে আমাদের উৎসাহ- উদ্দীপনাই শুধু জোগাতো না, অনেক প্রয়োজনীয় পরামর্শও দিতেন। কীভাবে বোলিং করলে উইকেট পাবো, ব্রেকথ্রু পাবো, সেসব বাতলে দিতেন। তিনি ছিলেন একজন দুর্দান্ত বন্ধু। সবাই বলবে, ভদ্র ও অমায়িক ক্রিকটার ছিলেন বেলাল। খুবই হার্ড হিটিং ব্যাটার ছিলেন। উইকেটের মাঝে কুইক রানারও। নিজের কাজটুকু ঠিকমতোই করতেন। অনেক টুকরো স্মৃতিই মনে পড়ে’- যোগ করেন জালাল ইউনুস।
শেষে বেলালের জন্য দোয়া করে জালাল ইউনুস বলেন, ‘সত্যিই আমি শোকাহত। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন, তার আত্মার শান্তি দান করুন।’
এআরবি/এমএইচ/এএসএম