সিরাজের সফলতার পেছনে মায়ের দোয়া, বাবার কবর জিয়ারত

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৪০ পিএম, ০৫ আগস্ট ২০২৫

ভারতীয় ক্রিকেটে এখন চলছে মোহাম্মদ সিরাজের গুণগান। কারণ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওভালে পাঁচ সিরিজের শেষ টেস্টে তিনিই ভারতের জয়ের নায়ক। এমনকি সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও। অথচ এই সিরাজ ভারতীয় দলে চান্স পাননি গেল ফেব্রুয়ারিতে হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে!

কীভাবে এমন দুর্দান্তভাবে নিজেকে ফিরে পেলেন সিরাজ, সেই প্রশ্নই এখন সবার মনে।

সিরাজের সফলতার পেছনের গল্প জানতে তার মা শাবানা বেগমের সাক্ষাৎকার নেয় ভারতীয় গণমাধ্যম ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’। সেখানেই উঠে আসে অনেক তথ্য।

শাবানা বেগম জানান, ক্রিকেট সফরের আগে-পরে বাবার কবর জিয়ারত করা ছিল সিরাজের অভ্যাস। টুর্নামেন্টে যাওয়ার আগে বাবা মোহাম্মদ গাউসের কবর জিয়ারত করে দোয়া ও আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন তিনি। সফর শেষে ফিরেও সরাসরি কবরস্থানে যান, বাসায় যাওয়ার আগেই।

ইংল্যান্ড সফরে যাওয়ার আগে সিরাজ ব্যাগ গুছিয়ে মাকে জড়িয়ে বলেন, ‘আম্মা, আমার জন্য দোয়া করো। আমি ভালো খেলতে চাই, আর ভারতের জয় নিশ্চিত করতে চাই।’ এরপর স্বভাবসুলভ বাবার কবর জিয়ারত করে বিমানবন্দরের পথে রওনা হন।

২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় ইন্তেকাল করেন সিরাজের বাবা। এরপর থেকেই কবর জিয়ারতের মাধ্যমে বাবার সঙ্গে মানসিকভাবে যুক্ত থাকতেন তিনি। সিরাজের বাবা গাউস ছিলেন একজন অটোরিকশা চালক। তিনিই সিরাজের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নপূরণে সবচেয়ে বড় সহায়ক ছিলেন।

সিরাজের মা শাবানা বেগম বলেন, ‘সে (সিরাজ) তার আব্বুকে খুব ভালোবাসে। আর তার আব্বুও তাকে ঠিক ততটাই ভালোবাসতেন। সিরাজের জন্য সব কিছু করতেন। আমার দোয়া সবসময়ই সিরাজের সঙ্গে আছে। আল্লাহ আমার বাচ্চাকে সবকিছুতে সাফল্য দান করুন।’

সিরাজের ভাই মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘আম্মা সবসময় ভাইয়ের (সিরাজ) জন্য দোয়া করেন। মায়ের দোয়ার মধ্যে অনেক শক্তি আছে। আমি বিশ্বাস করি, বাবা-মায়ের দোয়ার কারণেই সে আজ ভারতের হয়ে এত ভালো করছে। সে প্রতিদিন ভিডিও কলে আম্মার কাছে দোয়া চায়।’

বাবা মারা যাওয়ার মা কীভাবে সিরাজকে সান্ত্বনা দিয়েছেন, সে বিষয়ে ইসমাইল বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় আব্বা মারা যাওয়ার পর সিরাজ ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু আম্মা তখন বলেছিলেন, ‘যা হওয়ার হয়ে গেছে, এখন খেলায় মন দাও।’

ইংল্যান্ড সফরে টানা পাঁচটি টেস্ট খেলেন সিরাজ। ওভালে শেষ টেস্টেও করেন ৩৬.১ ওভার বোলিং। কীভাবে সিরাজ নিজের ফিটনেসে এতটা উন্নত করলেন, সেটি জানাতে গিয়ে উঠে আসে বিরাট কোহলির নাম। কেননা কোহলির অনুপ্রেরণাতেই ফিটনেসের চূড়ান্ত পর্যায়ে গেছেন সিরাজ।

ইসমাইল বলেন, ‘এখন তার ফিটনেস অনন্য পর্যায়ে। এর পুরো কৃতিত্ব বিরাট কোহলির। সে (সিরাজ) বিরাট ভাইয়াকে নিজের বড় ভাইয়ের মতো দেখে। তার আগ্রাসন, ক্ষুধা- সবই সে বিরাট ভাইয়ার থেকে পেয়েছে। ২০১৮ সালে সিরাজের আইপিএল ছিল খুব খারাপ। তখন অনেক প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু বিরাট ভাইয়া তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি জানতেন, সিরাজের মধ্যে কী আছে। তখন তিনি আইপিএলে আর ভারত দলে সিরাজকে যথেষ্ট সুযোগ দেন। পুরো কৃতিত্বই বিরাট ভাইয়ার। সিরাজ নিজেই একাধিকবার স্বীকার করেছে যে তার ক্যারিয়ারের জন্য সে বিরাট ভাইয়ার কাছে ঋণী।’

এমএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।