২২ কোটি টাকার গাড়ি কিনলেও রাস্তায় চালাতে পারবেন না নেইমার

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:২৫ পিএম, ২৩ জুলাই ২০২৫

মাঠের ভেতর নেইমারের গল্প কমবেশি সবাই জানে। ডিফেন্ডারদের হতভম্ব করে দেওয়া ড্রিবল, মধ্যাকর্ষণ তত্বকে অস্বীকার করা গোল, ফুটবল পায়ে দৃষ্টিনন্দন প্রদর্শনী- ইউরোপ, এশিয়া হয়ে লাতিনে ফিরে যাওয়ার পরও কমবেশি এসব গল্প তার সঙ্গী। তবে, মাঠের বাইরে তার প্রকৃত গল্প ক’জন জানেন?

বিলাসবহুল জীবন-যাপনে অভ্যস্ত নেইমার, এটাও প্রায় অনেকেই জানেন। তবে, তার সংগ্রহশালায় পৃথিবী বিখ্যাত সব ধরনের গাড়ীর সম্ভার রয়েছে, এটাও বা কতজন জানেন? সেই সংগ্রহশালায় আরও একটি ঝাঁ-চকচকে সংস্করণ যুক্ত করেছেন নেইমার। যেটা দিয়ে আবারও সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছেন নেইমার জুনিয়র।

১.৮ মিলিয়ন (২২ কোটি টাকা প্রায়) ডলারে ব্যাটমোবাইলের বিখ্যাত ট্রাম্বলার গাড়ির রেপ্লিকা কিনে নিলেন। ক্রিস্টোফার নোলানের ডার্ক নাইট ট্রিলজির ব্যাটমোবাইলের এই জেট-কালো, সাঁজোয়া গাড়িটি, যা তার ৫০০ হর্স পাওয়ারের শক্তিশালী ভি-৮ টারবাইন ইঞ্জিনের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, এই গাড়ী সাধারণের রাস্তায় চালানোর জন্য বৈধ নয়। সুতরাং বিপুল পরিমাণে অর্থ দিয়ে কিনলেও এই গাড়িটি নেইমার চালাতে পারছেন না।

যেভাবে গাড়িটি কিনলেন নেইমার

একটি এক্সক্লুসিভ অনলাইন নিলাম থেকে এই গাড়িটি কিনেছেন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা।ওই নিলাম সাইটে স্ক্রল করতে গিয়ে ব্যাটমোবাইলের সন্ধান পান। দেখলেন, ক্রিস্টোফার নোলানের ডার্ক নাইট ট্রিলজির একটি সম্পূর্ণ কার্যকরী ব্যাটমোবাইল রেপ্লিকা। এ ব্যাটম্যানেরই তো দীর্ঘদিনের ফ্যান তিনি।

দ্রুত বিড করেন তিনি এবং জিতেও গেলেন। দ্রুত টাকা পাঠিয়ে দিলেন। সাও রোকে শহরের ড্রিম কার মিউজিয়াম থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরের সাও পাওলোয় নেইমারের গ্যারেজে গাড়িটি পৌঁছে দেওয়া হয়। এর নকশা করেছেন আদেমার কাবরাল নামের এক ডিজাইনার। এটি তৈরিতে ৫০ জনের একটি দল কাজ করেছে টানা তিন বছর!

চমকপ্রদ তথ্য হলো- একেবারে সিনেমার গাড়ির মতো এই ব্যাটমোবাইলের পেছন থেকেও আগুন ছোড়ার ফিচার রাখা হয়েছে!

batmobile

গাড়িটি নেইমারের সাও পাওলোয় তার ব্যক্তিগত কম্পাউন্ডে পৌঁছানোর পর তার বন্ধুদের মাঝে দারুণ উত্তেজনা তৈরি হয়। নেইমার গাড়িটির ইঞ্জিন চালু করতেই মাটি কেঁপে ওঠে এবং তার সঙ্গীরা সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য সেই মুহূর্তটি রেকর্ড করে রাখেন।

রাস্তায় চালাতে পারবেন না গাড়িটি

যদিও নেইমারের এই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কারণ, ব্যাটমোবাইলের এই গাড়ী ব্রাজিলের রাস্তায় চলার জন্য বৈধ নয়। কোনো লাইসেন্স প্লেট, নির্গমন মান বা পরিদর্শন পাস করারও সম্ভাবনা নেই। সুতরাং, নেইমার এই গাড়িটি সাও পাওলোর রাস্তায় বা স্টেডিয়ামে চালাতে পারবেন না।

যদিও নেইমার এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন। তিনি আইনজীবী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন, এমনকি ব্যাটমোবাইলকে ‘সাংস্কৃতিক শিল্পকর্ম’ হিসেবে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ যুক্তি গ্রহণ করেনি। একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘একই দামে তিনি একাধিক ফেরারি কিনে চালাতে পারতেন।’

নিরুৎসাহিত না হয়ে, নেইমার তার কম্পাউন্ডে একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাক তৈরি করেছেন, যেখানে তিনি ব্যাটমোবাইল চালালেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই গাড়ির ভিডিও শেয়ার করেছেন, ক্যাপশন দিয়েছেন, ‘রাস্তার কি দরকার যখন তুমি ব্যাটম্যান?’

সমালোচনার মুখে নেইমার

তবে এই নেইমারের এই গাড়ী কেনা সমালোচনার মুখে পড়েছে। একটি এক্স পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘লাখোপতিরা টাকা নষ্ট করছে যখন মানুষ না খেয়ে মরছে,’ যেটা হাজার হাজার মানুষ পছন্দ করেছে।

প্রতিক্রিয়ার মুখে, নেইমার স্থানীয় বাচ্চাদের তার কম্পাউন্ডে ‘ব্যাটমোবাইল ডে’ তে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যেখানে তারা গাড়ির সাথে ছবি তুলেছে এবং আনন্দ উপভোগ করেছে। এ বিষয়ে নেইমার বলেন, ‘এটা টাকার ব্যাপার নয়, এটা আনন্দের ব্যাপার।’

তবে, এই ব্যয়বহুল ব্যাটমোবাইল এখন তার গ্যারেজে পড়ে আছে, একটি চকচকে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে, যা নেইমারের বিলাসবহুল জীবনযাপনের আরেকটি প্রমাণ।

neymar

নেইমারের আরও যত গাড়ির কালেকশন

নেইমারের গ্যারেজে এর আগেই ছিল একঝাঁক বিলাসবহুল গাড়ি- ল্যাম্বরগিনি হুরাকান, অডি আর-৮ স্পাইডার, বেন্টলি কন্টিনেন্টাল জিটি, ফেরারি পুয়েরোসাঙ্গুয়ে, অ্যাস্টন মার্টিন ডিবিএক্স। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো সিনেমার পর্দা কাঁপানো এক ব্যাটমোবাইল!

এর আগে, ২০২২ সালে প্যারিসে ‘দ্য ব্যাটম্যান’ সিনেমার প্রিমিয়ারে অভিনেতা রবার্ট প্যাটিনসন ও জো ক্র্যাভিটজের সঙ্গে পোজ দিয়েছিলেন তিনি। এমনকি সম্প্রতি সান্তোস ক্লাবের ড্রেসিং রুমেও তাকে দেখা গেছে ব্যাটম্যানের পোশাকে!

আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।