ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে রাজনীতি ছাড়ছেন ববির ছাত্রলীগ কর্মীরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরিশাল
প্রকাশিত: ০৪:১৭ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

প্রতিষ্ঠার এক যুগ পার হলেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) নেই ছাত্রলীগের কোনো সাংগঠনিক কাঠামো। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের অনুসারী হিসেবে অনেক শিক্ষার্থীই নিজেদের ছাত্রলীগ নেতা দাবি করছেন। এভাবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না হওয়ায় এবং রাজনৈতিক কারণে মামলা-হামলার শিকার হয়ে অনেকেই এখন হতাশ।

সম্প্রতি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন সেখানকার ছাত্রলীগ কর্মীরা। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন শিগগির আসছে কমিটির ঘোষণা।

জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত কয়েক দফা বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কর্মিসভা ও পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের জীবনবৃত্তান্ত নেওয়া হলেও এখনো ছাত্রলীগের কোনো কমিটি হয়নি সেখানে। গত একমাসে প্রায় ডজনখানেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অনেকেই এ নিয়ে ফেসবুকে দিয়েছেন আবেগঘন স্ট্যাটাস।

রাকিব হাসান নামে একজন লিখেছেন, ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক সব কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিলাম। বড় এবং ছোট সবার জন্য শুভকামনা।’

গাজী মাশরুর নামে আরেক শিক্ষার্থী সোমবার রাতে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘দীর্ঘদিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি না হওয়ায় রাজনীতিটা আর টেনে নিতে পারছি না... বিদায়।’

এ ধরনের সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ জানতে রাকিব হাসানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি ক্লাস এইট থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়ে মুজিব আদর্শকে সমুন্নত রাখবো এই উদ্দেশ্যে ভর্তির পর থেকেই রাজনীতি করে আসছি। কিন্তু দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় আমি হতাশ। তাছাড়া সম্প্রতি দেখা গেছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বেড়েই চলছে। এসব কোন্দলকে কেন্দ্র করে হওয়া মামলায় নির্দোষ অনেককে আসামি করা হচ্ছে। এ ধরনের অপচর্চার মধ্যে রাজনীতি করে যাওয়াটা নিজের জন্য শুভকর নয় বলেই মনে করছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী অমিত হাসান রক্তিম বলেন, ‘প্রায় এক দশক ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বারবার কেন্দ্র থেকে কমিটি করার আশ্বাস দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো পরিচয় হয়নি আমাদের। সাংগঠনিক কাঠামো না থাকায় অনেকে ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে অপরাধের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। এতে দোষারোপের শিকার হচ্ছি আমরা, জীবন নষ্ট হচ্ছে আমাদের। এতে অনেককেই দেখছি হতাশ হয়ে পড়ছে।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব শিক্ষার্থীকে হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ান বলেন, রাজনীতি একটা দীর্ঘ ও চলমান প্রক্রিয়া। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের পরামর্শ দেবো কেউ যেন হতাশ না হয়। কেন্দ্রে যারা আছেন তাদেরও বলবো বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে যেন সাংগঠনিক কাঠামো দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারটি আমাদের মাথায় আছে। দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট সেটি। দ্রুত সেখানে কমিটির ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শাওন খান/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।