শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
রাবির ভর্তিচ্ছু ছাত্রীকে ‘চোর’ বলে সম্বোধন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকারের বিরুদ্ধে ভর্তিচ্ছু নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই শিক্ষক। ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। অধ্যাপক ওমর ফারুক ওই কেন্দ্রের পরিদর্শক ছিলেন।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় প্রথম শিফটের ভর্তি পরীক্ষা শেষে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ওই শিক্ষার্থী। তিনি নওগাঁর নিয়ামতপুর থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ৪০৮ নম্বর কক্ষের পরীক্ষার্থী ছিলেন।
লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, পরীক্ষা শুরুর প্রায় আধা ঘণ্টা পর কেন্দ্রের দায়িত্বরত শিক্ষক সই দেওয়ার জন্য আমার কাছে আসেন। আমার মাথায় ওড়না থাকায় এবং প্রবেশপত্রের ছবিতে মাথায় ওড়না না থাকায় তিনি আমাকে ধমক দেন। এরপর বলেন, ‘তুমি যেভাবে ছবি উঠিয়েছ, সেভাবে যেহেতু আসনি, সেহেতু এই ক্যাম্পাসে প্রবেশের অধিকার নেই’। এছাড়া তিনি অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন। আমাকে চোর বলে সম্বোধন করেন এবং বলেন, ‘একে সাইজ করা দরকার’।
ওই শিক্ষার্থী অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, একপর্যায়ে তিনি আমার খাতা কেড়ে নেন এবং প্রায় ১০ মিনিট পর ফেরত দেন। তার ধমক এবং ভাষা শুনে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। ফলে আমি ভালোভাবে পরীক্ষা শেষ করতে পারিনি। তিনি যদি দুর্ব্যবহার না করতেন আমি আরও কয়েক নম্বর বেশি পেতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি উচ্চ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের কাছ থেকে এমন দুর্ব্যবহার পরীক্ষার হলে আমি আশা করিনি। তাই আমি এর যথাযথ বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ওই শিক্ষকের আচরণ কোনো নারী নিতে পারবে না। একজন দায়িত্বরত শিক্ষকের আচরণ এমন হতে পারে না। আমার পোশাক নিয়ে উনি কেন কথা বলবেন? বর্তমান সময়ে এসেও নারীদের পোশাক নিয়ে কথা শুনতে হয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, পরীক্ষার হলে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি এরকম কোনো কথা বলিনি। আমি কেন একজন শিক্ষার্থীকে চোর বলতে যাবো। আমার মেয়েও তো পরীক্ষা দিচ্ছে। কারো থেকে কোনো খাতাও আমি নেইনি। আমাদের রিপোর্টেও এরকম কিছু নেই। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, শিক্ষকের বিরুদ্ধে যে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রক্টরিয়াল বডির পক্ষ থেকে তাকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। অভিযোগটি সত্য প্রমাণিত হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মনির হোসেন মাহিন/জেডএইচ/জেআইএম