শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
অর্থ উপদেষ্টার পাশে জুলাই হত্যা মামলার আসামি সাবেক উপাচার্য
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকার একটি অনুষ্ঠানে তোলা ওই ছবিতে অর্থ উপদেষ্টার পাশে ফরিদ উদ্দিনকে দেখা যায়। ছবিটি প্রকাশের পর থেকেই শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
জানা যায়, ২০২২ সালে শাবিপ্রবির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের ঘটনার জেরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলার অভিযোগ ওঠে। লাঠিচার্জ, গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেডে বহু শিক্ষার্থী আহত হন এবং পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার জন্য শিক্ষার্থীরা তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনকে দায়ী করে থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফরিদ উদ্দিন ২০২৪ সালের জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহীদ হওয়া শাবিপ্রবি কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রুদ্র সেন হত্যা মামলার আসামি। এই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সিলেটের সাবেক মেয়র ও শাবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনসহ ৭৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এদিকে শাবিপ্রবির সাবেক এই উপাচার্যের সাথে অর্থ উপদেষ্টার ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইপিই) বিভাগের শিক্ষার্থী পলাশ বখতিয়ার লিখেছেন, ‘অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সাস্টের সাবেক ভিসি ফরিদ। একজন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর চেয়ারে বসেছে। অন্যজন জুলাই চলাকালীন আন্দোলনকারীদের লিস্ট দিয়েছে সরকারকে, আন্দোলনে শহীদ রুদ্র সেনকে নিয়ে কটূক্তি করেছে, বাইশে ক্যাম্পাসে গুলি চালিয়েছে। আমাদের সুশীলতার দরুণ বিবেকবুদ্ধিহীন, অথর্ব, পা চাটা উপদেষ্টারা দেশ চালাইতেছে। এই নোংরামির শেষ কোথায় কে জানে?’
শাবিপ্রবি শাখা ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি আজাদ শিকদার ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, ‘যে ফরিদ ২০২২ সালে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও বোমা হামলা চালিয়েছিল, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে আবার লাঠিচার্জ করিয়েছিল এবং লাথি দিয়ে আমাদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়েছিল। যেই ভিসি আমাদের তালিকা করে হাসিনার হাতে দিয়েছিল, আমাদের শহীদ রুদ্র সেনের হত্যাকে অপমৃত্যু বানিয়েছিল। সেই হত্যামামলার আসামিই এখন ঢাবির ইকোনমিকস ডিপার্টমেন্টের রিইউনিয়ন প্রোগ্রামে অর্থ উপদেষ্টার পাশে। এ জন্যই কি জুলাই–আগস্টে ২০০০ মানুষ জীবন দিয়েছিল? খুনিদের এভাবে সারাদেশে পুনর্বাসন চলছে।’
আরেক শিক্ষার্থী ইয়াসির ইশমাম লিখেছেন, ‘সাস্টের সাবেক ভিসি ফরিদ, যে কিনা ৫ আগস্টের পর পালিয়ে গেছে এবং এখন ও বেতন নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, তাকে গতকাল দেখা গিয়েছে অর্থ উপদেষ্টার পাশে। যারা এর ব্যাপারে জানেন না তারা সাস্টের বা সিলেটের কাউকে জিজ্ঞেস করলেই জানতে পারবেন সে কোন লেভেলের আওয়ামী দালাল ছিল।’
এসএইচ জাহিদ/এমএন/এএসএম