শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়

পোষ্য কোটায় বাড়তি সুবিধা নিয়ে সমালোচনা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক শাবিপ্রবি
প্রকাশিত: ০৩:৪৪ পিএম, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

২০১৪ সাল থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তিতে পোষ্য কোটা বিদ্যমান থাকার পরও এ বছর নীতিমালায় পরিবর্তন এনেছে কর্তৃপক্ষ। পূর্ব থেকে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পোষ্যদের জন্য কোটায় ভর্তির সুবিধা চালু রয়েছে। তবে নতুন সংযোজন হিসেবে এসব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ‘অবসরোত্তর’ পাঁচ বছর পর্যন্ত ও ‘মরণোত্তর’ চাকরির সময়সীমা পর্যন্ত ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। যেখানে কোটা সুবিধা হ্রাসের জন্য সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটার ব্যাপ্তি বাড়ানো হচ্ছে তা নিয়ে সমালোচনা করছেন একাধিক শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

গত ২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় পোষ্য কোটা বিধিমালায় পরিবর্তন করে ‘অবসরোত্তর’ ও ‘মরণোত্তর’ সুবিধা চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক সদস্য। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, বিভাগীয় প্রধানগণ ও সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: রাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলসহ ৩ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান 

জানা যায়, স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তিতে পোষ্য কোটায় ২০ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে বিজ্ঞান অনুষদে ১৫ জন, মানবিক অনুষদে চারজন ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে একজন শিক্ষার্থী এ কোটায় ভর্তি হতে পারবেন। তবে এ বছর কোটায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা না বাড়ালেও কোটা সংক্রান্ত নীতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। চালু করা হয়েছে ‘অবসরোত্তর’ ও ‘মরণোত্তর’ সুবিধা। যা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানরা ভোগ করতে পারবেন।

নতুন গৃহীত এ নীতি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অবসর গ্রহণ করার পর পাঁচ বছর পর্যন্ত তাদের সন্তানদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটায় ভর্তির সুযোগ পাবেন। অপরদিকে অবসর গ্রহণের আগে যদি কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী মারা যান, তাহলে তাদের অবসর গ্রহণের সময়সীমা পর্যন্ত তাদের সন্তানরা এ কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন। এক্ষেত্রে তারা নীতিমালা অনুযায়ী সর্বোচ্চ দুবার এ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

নতুন এ নীতিতে পরিবর্তন আনার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী অবসরে যাবেন। অনেকেই চলেও গেছেন। অবসরে গিয়েও যাতে তারা তাদের সন্তানদের পোষ্যকোটায় ভর্তি করাতে পারেন সেজন্য এ নীতিমালায় সংযোজন করা হয়েছে। অনেকে অবসরে গিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন। তবে পোষ্য কোটা নীতিমালা কোনো চুক্তিভিত্তিক বা মাস্টাররোল কিংবা অ্যাডহকে নিয়োগপ্রাপ্তদের জন্য এ সুবিধা না থাকায় চুক্তিভিত্তিক এক কর্মকর্তার সন্তানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দিতে এ পরিবর্তন আনা হয়েছে।

আরও পড়ুন: পোষ্য কোটা বাতিল ও মিড ডে মিল চালুর প্রস্তাব তোলা হবে 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের একাধিক সদস্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত কয়েকজন ব্যক্তিকে বিশেষ সুবিধা প্রদানের প্রেক্ষিতে এ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। যেখানে সরকার কোটা পদ্ধতি হ্রাসের চেষ্টা করে যাচ্ছে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটার পরিধি বড় করা হচ্ছে। যা কোনোভাবেই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নয়।

নীতিমালায় নতুন এ সংযোজনের কারণ জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান বলেন, এ নীতি এতদিন পূর্ণাঙ্গ ছিল না। এ বছর কর্তৃপক্ষ মনে করেছে এ বিষয়গুলো ‘ওপেন’ করতে যাতে কাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। তাই এখন এ নীতি পূর্ণাঙ্গ করেছে। অনেক বিষয় আছে সময়ের প্রেক্ষিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হয়।

এ নীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ব্যক্তিকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করতে নেওয়া হয়েছে কি না সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

নাঈম আহমদ শুভ/আরএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।