ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
বাসের সিটে বসা নিয়ে তর্কের জেরে ছাত্রলীগকর্মীর মারধর

অডিও শুনুন
বাসের সিটে বসা নিয়ে তর্কের জেরে রিয়াদ নামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগকর্মীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিচার চেয়ে প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, টিউশনি শেষ করে হাসপাতাল মোড় থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার বাসে ওঠেন রিয়াদ। নিজের জন্য একটি সিট দখলে রেখে পেছনের সিটে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করেন তিনি। পরবর্তীতে বাস ছাড়লে দখলে রাখা সিটে বসতে গেলে শাখা ছাত্রলীগের ৮-১০ জন নেতাকর্মীরা তাকে বাধা দেন। তিনি প্রতিবাদ জানালে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় ছাত্রলীগকর্মী ও ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম ক্যাম্পাসে নেমে তাকে ‘দেখে নেবেন’ বলে হুমকি দেন।
রাত সাড়ে ৮টায় বাস ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে থামলে রিয়াদ নামামাত্রই তারা তার ওপর চড়াও হন সামিউল। রিয়াদের জামার কলার ধরে মারধর শুরু করেন তিনি। তার সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগকর্মী বাংলা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র তরিকুল ইসলাম তরুন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের মিন্টু হোসেন, ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী সৌমিক, সিএসই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নাবিল আহমেদ ইমন ও সিয়ামসহ ৮-১০ জন তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন।
এগিয়ে এলে রিয়াদের বন্ধু সুরুজ আলীও মারধরের স্বীকার হন। তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী। সহপাঠীরা রিয়াদকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান।
সহপাঠীরা জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই সেশনের বন্ধুদের হাতে মার খেতে হলো। অথচ এখানে মারধরের কোনো প্রশ্নই আসে না। একে অপরকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে বিষয়টি সমাধান করা যেতো।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রিয়াদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে মার খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে হচ্ছে আমার। এর থেকে বড় আফসোস কি আর হতে পারে? এ ক্যাম্পাস সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য না। সামান্য একটি বিষয় নিয়ে তারা আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করলো। আমি তাদের সবার বিচার চাই।’
অভিযুক্ত ছাত্রলীগকর্মী সামিউল ইসলাম বলেন, ‘বাসের মধ্যে প্রচুর ভিড় থাকায় রিয়াদকে ভেতর দিয়ে যেতে মানা করেছিলাম। কিন্তু ও না শুনে আমাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। ক্যাম্পাসে নেমে তাকে ডেকে বোঝাতে গেলে আমার হাত ঝাড়ি মেরে আবারও তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় রিয়াদ ওর বন্ধুদের নিয়ে আমাদের ওপর চড়াও হলে তাৎক্ষণিক হাতাহাতি হয়। আমি ওকে হুমকি-ধামকি দেইনি।’
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় জাগো নিউজকে বলেন, আমি যতদূর জানি বাসে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ক্যাম্পাসে এসে রিয়াদ ও তার বন্ধুরা সামিউল ও তার বন্ধুদের উপর চড়াও হয়। এদিকে আবার দেখছি রিয়াদ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। ব্যস্ততা থাকায় আজ বসতে পারিনি। বুধবার উভয়পক্ষকে নিয়ে বসবো এবং সমাধানের চেষ্টা করবো।
রুমি নোমান/এসজে/এমএস