জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের ওপর কিশোর গ্যাংয়ের হামলা

পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।
এ ঘটনায় অন্তত ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎধীন। হামলার সময় পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৭ মার্চ) রাত ১০টার দিকে গেন্ডারিয়ার মুরগিটোলা মোড় এলাকায় প্রথম দফায় ও ১১টার দিকে দ্বিতীয় দফায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় শিক্ষার্থীদের। তখন এক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় দুজনকে আটক করে সূত্রাপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরবর্তী সময়ে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরে রাত ১১টার দিকে আবু সুফিয়ান ও শিহাব নামের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী মুরগিটোলা মোড়ে চা খেতে গেলে হঠাৎ স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের ৫০-৬০ জন ওই দুই শিক্ষার্থীর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তাদের চিৎকারে আশপাশে অবস্থান করা আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী এগিয়ে এলে তাদের উপরও আক্রমণ করে স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: গুচ্ছের গ্যাঁড়াকলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
গুরুতর আহত সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, আমি চা খাওয়ার জন্য বন্ধুর সঙ্গে বের হয়েছিলাম। হঠাৎ স্থানীয় কয়েকজন এসে আমাদের আটকিয়ে কোথায় থাকি জিজ্ঞাসা করে। বানিয়ানগর থাকি বলতেই আমাদের ওপর অনেকগুলো ছেলে আক্রমণ করে, এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। আমরা আগের ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানতাম না।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালালেও পাশে অবস্থান করা পুলিশ কিছুই বলেনি। হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে যায়নি পুলিশ। পুলিশ এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে বলেও জানান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমি বিষয়টি জানার পর আহতদের চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সূত্রাপুর ও গেন্ডারিয়া দুই থানার ওসির সঙ্গেই কথা বলেছি। থানায় অভিযোগ দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। পুলিশ যে শিক্ষার্থীদের উপর হাত তুলেছে, সেই ভিডিওটিও ওসিকে দিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গেন্ডারিয়া থানার ওসি মো. আবু সাঈদ আল মামুন বলেন, এটা সূত্রাপুর থানার অধীনে। ঘটনার সময় সেখানে আমাদের পুলিশ সদস্যরা ছিল। তারা মারামারি থামিয়ে দিয়েছে। পরে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তবে এ ঘটনায় আমাদের এখানে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।
সূত্রাপুর থানার ওসি মো. মইনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিম এখনো আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। কোথা থেকে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে তা ভিকটিম আসলে তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারবো। আর যে দুজনকে আটক করা হয়েছিল তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তাই তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রায়হান আহমেদ/এমএইচআর/জেআইএম