নিজ কর্মীকে কোপানোর স্বীকারোক্তি, চবি ছাত্রলীগ সভাপতির অডিও ফাঁস

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ০৮ জুন ২০২৩
অভিযুক্ত চবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল

বিতর্ক যেন পিছুই ছাড়ছে না চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের। এবার তিনি বিতর্কিত নিজের কর্মীকে কোপানোর স্বীকারোক্তি দিয়ে। বুধবার (৭ জুন) রাতে এমন একটি অডিও ফাঁস হয়। যাতে শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও নিজ গ্রুপ সিএফসির কর্মী মোহাম্মদ রমজান হোসাইনকে কোপানোর কাজ তিনি করিয়েছেন বলে শিকার করেন।

এদিকে এ ঘটনার জেরে রাতেই তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা ‘রুবেল নিপাত যাক, চবি ছাত্রলীগ মুক্তি পাক’, ‘অবৈধ সভাপতি মানি না মানবো না’, ‘নৈতিকতাহীন সভাপতি, মানি না মানবো না’ স্লোগান দেন। পরে রুবেলের বিশ্ববিদ্যালয়ের আমানত হলের ৩১১ নম্বর কক্ষে ভাঙচুর করেন।

এর আগে ১ জুন শাখা ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপ সিএফসি ও সিক্সটি নাইনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেখানে মারাত্মকভাবে কুপিয়ে আহত করা হয় শাখা ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ রমজান হোসাইনকে।

ভাইরাল হওয়া অডিওতে রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘তাকে (রমজান) বিভিন্ন মানুষ আয়ত্তে নিয়ে নিছে। নিজের ........(স্ল্যাং) নিজেই মারি ফেলবে। রমজাইন্নারে মারতে হইছে আমার? আমারে চিটাগাং ভার্সিটির সবাই ভয় পাইরে ভাই, ভয় পায়। তুই শুধু আমার পাশে থাক। বাকি কাজ অটো হয়ে যাবে। রমজাইন্নারে কোপ পড়ছে না? অনেক লাফাইছে না? লাফাইছে রমজান। ওই হিসেবে পড়ি গেছে। সবকিছু মুখে বলতে হবে কেন? চুপ করে থাক না। আমারে দাঁড়াইতে দে। দেখবি অনেকে হিসাবের মধ্যে হয় পায়ে এসে পড়বে নয়তো নিজের মতো নিজের হিসাব মিলাই নিবে।’

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভাইরাল হওয়া অডিওতে শোনা যায় রুবেল নিজের কর্মীকে আঘাত করার কথা শিকার করেছেন। যে নিজ গ্রুপের কর্মীকে আঘাত করতে পারে তার আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অতীতেও তিনি এমন ন্যাকারজনক কাজ করেছেন। চবি ছাত্রলীগের নাম ডুবিয়েছেন। ছাত্রলীগকে বিক্রি করে নিজের অনৈতিক ফায়দা লুটেছেন। আদর্শ বিবর্জিত কোনো নেতার নেতৃত্ব আমরা মানবো না। তাই ক্যাম্পাস থেকে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।’

ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সাদাফ খান বলেন, ‘অডিওতে স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে রুবেল রমজানকে ষড়যন্ত্র করে কুপিয়েছে এবং তা গর্বের সঙ্গে শিকার করছে। নিজ গ্রুপের কর্মীকে যখন একজন ছাত্রলীগ নেতা ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থেকে হামলা করাতে পারে তার কাছে এতো বিশাল ইউনিটের ছাত্রলীগকর্মীরা কীভাবে নিরাপদ? মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কারণে তার আসলেই এখন কোনো দায়বদ্ধতা নেই। সে নিজের ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছে। খুব দ্রুত এ মেয়াদহীন বিতর্কিত কমিটি বাতিলের দাবি জানাই।’

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল জাগো নিউজকে বলেন, ‘ফোনকল রেকর্ডটি সুপার এডিটেড। এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমার বিভিন্ন কথাবার্তাকে সংযোজন বিয়োজন করে এই অডিও রেকর্ডটা বানানো হয়েছে।’

২০১৯ সালে ১৪ জুলাই রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এক বছর মেয়াদি এ কমিটির বয়স বর্তমানে প্রায় চার বছর।

এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।