রংপুর

৯ দিনেও উদ্ধার হয়নি পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে নিখোঁজ দুই কিশোরী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক রংপুর
প্রকাশিত: ০৮:২৮ পিএম, ২১ জুন ২০২৫

রংপুর সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে নিখোঁজের ৯ দিনেও উদ্ধার হয়নি দুই কিশোরী। ওই দুই কিশোরীকে উদ্ধার, সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালকসহ দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজ।

শনিবার (২১ জুন) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে এই আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের পুনবার্সন কেন্দ্রের নিবাসী শিশুদের শারীরিক-মানসিক ও যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। তারা রক্ষক হয়ে ভক্ষকের কাজ করছেন। পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে নিখোঁজ দুই মেয়ে উদ্ধার হওয়ার পর তারা সাংবাদিকদের কাছে পুনর্বাসন কেন্দ্রের ভয়াবহ নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরেছিল। তারা জীবন বাঁচাতে পনর্বাসন কেন্দ্র থেকে চলে গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সমাজসেবার কর্মকর্তারা পুলিশের সহযোগিতায় সেই কিশোরীদের আদালতের মাধ্যমে আবারও পুনবার্সন কেন্দ্রে নিয়ে গেছেন। এতে উদ্ধার হওয়া কিশোরীদের ওপর সমাজসেবার কর্মকর্তারা নির্যাতনসহ গুম করতে পারেন বলে শঙ্কা রয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক অনিল চন্দ্র বর্ম্মন নানা ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি বলেছেন—মিডিয়া, রংপুরবাসী কেউ তাকে তার চেয়ার থেকে সরাতে পারবে না। তাহলে তার খুঁটির জোর কোথায়? এটি রংপুরবাসীর প্রশ্ন।

আরও পড়ুন:

তারা বলেন, বিগত সময়ে সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি প্রমাণিত হলে তাদের বদলি করা হয়। শিশুদের ধর্ষণের সুযোগ করে দেওয়া কর্মকর্তাদের বদলি নয়, আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এসময় সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক অনিল চন্দ্র বর্ম্মনসহ দোষী কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ নিখোঁজ দুই কিশোরীকে উদ্ধারে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন রংপুর প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট জোবাইদুল ইসলাম, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট মোকছেদ বাহলুল, অ্যাডভোকেট মাহে আলম, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ শমসে আরা বিলকিস, এবি পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজওয়ানুল বারী রিজুসহ অন্যরা।

এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, রংপুর সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে নিখোঁজ হওয়া চার কিশোরীর মধ্যে দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি দুজনকে উদ্ধারে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।

অভিযোগের বিষয়ে রংপুর সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক অনিল চন্দ্র বর্ম্মনকে একাধিকার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

গত ১২ জুন রাতে নগরীর দেওডোবা ডাংগীরপাড় এলাকার রংপুর সমন্বিত শিশু পুনবার্সন কেন্দ্র থেকে নিখোঁজ হয় নিবাসী নিতু, স্মৃতি, কৃতি ও আশা নামে চার কিশোরী। ১৫ জুন পরিবারের সদস্যরা স্মৃতি ও কৃতিকে নগরীর চিড়িয়াখানা এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ তাদের আদালতের মাধ্যমে পুনরায় পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠায়।

এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার হওয়া কিশোরীদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠাতে অস্বীকৃতি জানান। আপত্তির কারণ হিসেবে পুনর্বাসন কেন্দ্রে মেয়ের ওপর নির্যাতন ও তার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে তারা শঙ্কিত বলে গণমাধ্যমকে জানান। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছে পুনবার্সন কেন্দ্রের নিবাসী নিতু ও আশা।

জিতু কবীর/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।