মৌসুমের শেষ সময়ে প্রস্তুত হচ্ছে নোনা ইলিশ

শরীফুল ইসলাম শরীফুল ইসলাম , চাঁদপুর প্রতিনিধি চাঁদপুর
প্রকাশিত: ০১:১৯ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চাঁদপুরে মৌসুমের শেষ সময়ে ইলিশ সংরক্ষণ করা হচ্ছে বিশেষ প্রক্রিয়ায়। ইলিশ কেটে লবণ মেখে সংরক্ষণ করা হয়, যা স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘নোনা ইলিশ’ নামে। পাশাপাশি ইলিশ থেকে আলাদা করা ডিম বিশেষ বক্সে সংরক্ষণ করে বিক্রি করা হচ্ছে চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

ব্যবসায়ীরা জানান, নোনা ইলিশের কেজিপ্রতি দাম এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে। অন্যদিকে ইলিশের ডিম বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৮০০ থেকে চার হাজার টাকা কেজি দরে। দাম কিছুটা বেশি হলেও চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।

মৌসুমের শেষ সময়ে প্রস্তুত হচ্ছে নোনা ইলিশ

চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাট ঘুরে দেখা গেছে, লবণ ইলিশ বা নোনা ইলিশ এরইমধ্যে মজুত শুরু হয়েছে। ইলিশের মৌসুম না থাকা এবং নদীতে ইলিশ না পাওয়া গেলে ওই সময়ে ব্যবসায়ীরা নোনা ইলিশ বিক্রি করেন। দেশের উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন জেলায় এই মাছের চাহিদা ভালো থাকায় বেশ লাভবানও হন তারা।

এদিকে নোনা ইলিশ তৈরি করার আগে তার থেকে ডিম আলাদা করে বক্সে সংরক্ষণ করা হয়। আর ইলিশের ডিমকে অনেকেই ‘বিরল স্বাদ’ বলে অভিহিত করছেন, যার কারণে উচ্চমূল্যেও দ্রুত বিক্রি হচ্ছে এই ডিম।

চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটে নোনা ইলিশ প্রস্তুতকারী মো. আলাউদ্দিন বলেন, প্রথমেই ডিমওয়ালা মাছগুলো আলাদা করে রাখা হয়। সেখান থেকে কেটে ডিম আলাদা করে ইলিশগুলো লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। এসব লবণ ইলিশ বা নোনা ইলিশ ৬ মাস পর বিক্রি হবে। তবে নোনা ইলিশের চাহিদা উত্তরবঙ্গে সবচেয়ে বেশি। মৌসুম আর সরবরাহের ওপর ওই সময় দাম নির্ধারিত হয়ে থাকে।

মৌসুমের শেষ সময়ে প্রস্তুত হচ্ছে নোনা ইলিশ

শেরপুর থেকে আসা মো. হাবিব বলেন, আগে ইলিশের প্রচুর সরবরাহ ছিল, তখন দাম ছিল কম। কিন্তু এখন সরবরাহ অনেক কমে গেছে, যার কারণে নোনা ইলিশ আর ডিম কম পাওয়া যাচ্ছে। মূলত এখানকার সংরক্ষণ করা নোনা ইলিশ আরও ৫-৬ মাস পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাবে। ইলিশের মৌসুম যখন থাকবে না, তখন এই নোনা ইলিশ চাহিদা মেটাবে। আর ডিমের চাহিদা অনেক, দাম বেশি হলেও বিক্রি হয়ে যায়।

আরও পড়ুন-

নোনা ইলিশ ও ডিম ব্যবসায়ী আবু সাইদ বলেন, ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় ব্যবসার পরিস্থিতি আগের মতো নেই। আগে ইলিশ বেশি থাকায় এই ব্যবসায় অনেক ব্যবসায়ী ছিল। কিন্তু এখন কমে গেছে। বিশেষ করে নোনা ইলিশ সংরক্ষণ করার জন্য শ্রমিকও পাওয়া যায় না।

মৌসুমের শেষ সময়ে প্রস্তুত হচ্ছে নোনা ইলিশ

তিনি আরও বলেন, ইলিশের দাম বেশি হওয়ায় ডিমের দামও অনেক বেশি। আগে যেখানে ডিম ছিল দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা কেজি। এখন সেই ডিম বিক্রি হয় চার হাজার টাকায়। সবমিলিয়ে ব্যবসায়ী ও মালিকপক্ষ ভালো নেই। আমরা ভালো থাকলে ক্রেতারাও ভালো থাকবে।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার জানান, গত ২-৩ বছরে ইলিশের সরবরাহ অনেক কমেছে। বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা এখানে এসে ইলিশ কিনে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করেন। তবে অন্যবারের তুলনায় এই বছর ইলিশের সরবরাহ অনেক কম। যার কারণে তেমন নোনা ইলিশ সংরক্ষণ হচ্ছে না।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।