সাজিদের মৃত্যুকূপ দেখতে মানুষের ভিড়

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাজশাহী
প্রকাশিত: ০৭:৪২ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজশাহীর তানোরে পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে নিখোঁজ ছিল দুই বছরের ছোট্ট শিশু সাজিদ। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ৩২ ঘণ্টা পর ৬০ ফুট গভীর থেকে উদ্ধার ‍তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি পুরো দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। এটি মানুষের হৃদয়ে গভীরভাবে নাড়া দেয়। শিশু সাজিদ মারা গেছে। কিন্তু যে গর্তে পড়ে তার জীবন অবসান হয়েছে সেটি দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে মানুষজন ছুটে আসছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার ভোর থেকে তানোরের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, মেহেরপুর, জয়পুরহাটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন আসতে থাকে। তারা এসে সাজিদ যে গর্তে পড়ে গিয়েছিল সেটি ঘুরে দেখছেন। কেউ বা ঘটনাস্থলে এসে মুঠোফোনে নিজের আত্মীয়-স্বজনদেরও ফোনে ঘটনাটি বলছেন।

শুক্রবার ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধ ইসরাইল এসেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রাণীহাটি এলাকা থেকে। বয়সের ভারে ন্যুব্জ ইসরাইল বলেন, অনলাইনে ঘটনাটি জানার পর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। এসে ছেলেটিকে দেখতে পারিনি। তাই ছেলেটি যেখানে পড়ে মারা গেছে সেটি দেখলাম। ঘটনাটি হৃদয় বিদারক। আমরা রাণীহাটি থেকে ছয়জন এসেছি শুধুই নিজের মনকে একটু বুঝ দিতে।

নওগাঁর নিয়ামতপুর থেকে আসা শহিদুল ইসলাম বললেন, আমি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভোরে রওয়ানা দিয়েছি ছেলেটি যেখানে মারা গেছেন সেই স্থান দেখতে। শিশুটিকে উদ্ধারে প্রায় ১০কাটা জমি ৬০ ফুট গভীর করে পুরো পুকুর বানিয়ে ফেলতে হয়েছে। হৃদয় বিদারক এ ঘটনার সাক্ষী হতে পেরে ভালো লাগছে। আমার বাবা এ ঘটনায় চরমভাবে উদ্বিগ্ন। তবে তার আশার অনেক ইচ্ছা ছিল। অসুস্থ থাকায় তিনি আসতে পারেননি। আমি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দেখতে এসেছি। বাবাকে ফোন করে ঘটনাটি জানালাম। এমন হৃদয় বিদারক ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় এমনটাই প্রত্যাশা করি।

মেহেরপুরের মুজিবনগর থেকে আসা যুবক সাকিবুল হাসান বলেন, আমার মা-বাবাকে নিয়ে এসেছি দেখতে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় পুরো দেশে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে। তাই নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি। এজন্য পুরো পরিবার নিয়ে এসেছি সরাসরি দেখতে। দেখে একটু প্রশান্তি পাচ্ছি। সেই সঙ্গে ছোট্ট এ শিশুটির জন্য কষ্ট হচ্ছে। আল্লাহ যেন এ শিশুটির জন্য তার বাবা-মা ও আমাদের সবাইকে মাফ করে দেন।

এর আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সে কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠে শিশু সাজিদের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে স্থানীয় নেককিড়ি কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

সাখাওয়াত হোসেন/আরএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।