টানা বর্ষণে বরিশালে জলাবদ্ধতা : দুর্ভোগে নগরবাসী


প্রকাশিত: ১২:২০ পিএম, ২৫ জুন ২০১৫

টানা পাঁচ ঘণ্টার ভারী বর্ষণে বরিশাল নগরীর নিম্নাঞ্চল হাটুজল পানিতে ডুবে গেছে। নগরীর প্রধান কয়েকটি সড়কেরও একই অবস্থা। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত একটানা এ ভারী বর্ষণ হয়।

ভুক্তভোগীরা জানায়, জলবদ্ধতার সঙ্গে জোয়ারের পানি এককার হয়ে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। একই দুর্ভোগ বিরাজ করছে বরিশাল জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে। জোয়ারের পানিতে নদী-চর-জলাশয় ডুবে একাকার হয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে চর ও নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। বৈরী এ আবহাওয়ার কারণে দিনের প্রথমভাগে বরিশালের জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছিল। বেলা ১২টার পর বৃষ্টির পরিমাণ কমলে মানুষজন ঘর থেকে বের হওয়া শুরু করে।

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক পলাশ চৌধুরী জানান, বুধবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ২১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরমধ্যে রাত ৩টা থেকে ভোর ৯টা পর্যন্ত ২০৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এটা ছিল চলতি মৌসুমে একদিনের সর্বোচ্চ রেকর্ড বৃষ্টিপাত। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে থেমে থেমে মাঝারি ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। সকাল ৮টার পর বৃষ্টির বেগ কমলেও থেমে থেমে নগরীতে মাঝারি ও গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।

বেলা ১১টার দিকে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার বিশাল মাঠটি যেন এক  কুল-কিনারাহীন জলাশয়। পুলিশের ব্যবহৃত গাড়িগুলোর চাকা তলিয়ে গেছে পানির নিচে। সংলগ্ন পরেশ সাগর নামক বিশাল দিঘি ও পুলিশ লাইন্সেরর মাঠের জল মিলে একাকার হয়ে গেছে। পুলিশ লাইন্স মাঠের এ চিত্র ছিল নগরীর প্রায় সর্বত্র।

হাটুজল পারিমাণ পানিতে ডুবেছে নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোডের কাকলী সিনেমা হলের মোড়, নবগ্রাম রোডের বটতলা বাজার থেকে সিঅ্যান্ডবি রোড চৌমাথা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক, সদর অশ্বিনী কুমার হল চত্বর, সাংবাদিক মাইনুল হাসান সড়ক, বগুরা রোড মুন্সীর গ্রেজ, বরিশাল কলেজ সংলগ্ন মল্লিক বাড়ি রোড, কাউনিয়া, কলেজ রো, ভাটিখানা, পলাশপুরসহ নগরীর অনেক এলাকার প্রধান সড়ক। এসব এলাকার অনেক বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরউদ্দিন আহম্মেদ জানান, বৃহস্পতিবার বরিশালের নদ-নদীর পানির লেভেল ছিল এক দশমিক ৫৫। অর্থাৎ বিপদসীমার চেয়ে এক মিটার নিচে। উজানের পানির চাপ, ভারী বষ্টিপাত এসব কারণে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ`র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আবুল বশার মজুমদার জানান, নৌপথে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় ৬৫ ফুটের কম দৈর্ঘ্য`র তিনটি লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে অন্য লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

সাইফ আমীন/এআরএ/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।