বিশ্বের বৃহত্তম ইলিশ উৎসব বরগুনায়

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত: ০২:৫৮ পিএম, ০২ অক্টোবর ২০১৯

মাছের রাজা ইলিশ। আকার, আকৃতি, বর্ণ ও স্বাদে অতুলনীয় রূপালী ইলিশ বাঙালির রন্ধনশিল্পে এক আভিজাত্যপূর্ণ অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে। সেই ইলিশকে ঘিরে আজ (বুধবার) বরগুনায় উদযাপিত হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম ইলিশ উৎসব। বরগুনা জেলা প্রশাসন ও জেলা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম যৌথভাবে দিনব্যাপী এই উৎসবের আয়োজন করেছে।

এদিকে ইলিশ উৎসবকে ঘিরে বুধবার সকাল থেকেই জেলা সার্কিট হাউস মাঠে বাড়তে থাকে সর্বস্তরের জনতার ভিড়। সকাল সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য র‌্যালি। এতে শোভা পায় ইলিশের নানারকম প্লাকার্ড ও দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য। অংশ নেয় নারী, কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ। র‌্যালিটি সার্কিট হাউস মাঠ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুণরায় সেখানে এসে শেষ হয়। পরে উদ্বোধনী নৃত্যের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ইলিশ উৎসব।

উদ্বোধনী নৃত্যে উঠে আসে আবহমান বাংলার জল-জাল ও জেলেদের জীবন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বরগুনা-১ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ, পৌর মেয়র মো. শাহাদাত হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. জাহাঙ্গীর কবীর প্রমুখ।

Barguna-Pic-

সন্ধ্যার পর অনুষ্ঠিত হবে ইলিশবিষয়ক নাটক, আলোচনাসভা, কুইজ প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

দিনব্যাপী উৎসবে জেলার ছয়টি উপজেলা থেকে ২৫টিরও বেশি স্টল অংশ নিয়েছে। স্টলগুলোতে ইলিশের একশ প্রকার রান্না খাবার প্রদর্শিত হচ্ছে। স্বল্প মূল্যে বিক্রি হয় পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর নদীসহ বঙ্গোপসাগরের সুস্বাদু তাজা ইলিশ।

উপকূলীয় জেলা বরগুনার পাথরঘাটায় রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য পাইকারী ও বাজার কেন্দ্র বিএফডিসি। জেলার প্রধান তিন নদী পায়রা, বিষখালী, বলেশ্বরসহ বঙ্গোপসাগর থেকে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন ইলিশ আহরিত হয়। তাই বরগুনায় একটি ইলিশ গবেষণা কেন্দ্র ও জাদুঘর স্থাপনের দাবি উত্থাপন, মৎস্যজীবীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের মেলবন্ধন, মাছ ধরার নৌকার আধুনিকায়ন, ইলিশ অবতরণের ঘাটগুলিতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার চালুর লক্ষ্যকে সামনে রেখে ব্যতিক্রমী এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান জেলা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মনির হোসেন কামাল।

Barguna-Pic-

বরগুনার আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরা পারভিন বলেন, বরগুনা জেলার প্রায় এক লাখ মানুষ সরাসরি ইলিশ আহরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বঙ্গোপসাগর, বিষখালী পায়রা ও বলেশ্বর নদীর ইলিশের স্বাদ দেশের অন্য যে কোনো জেলার চেয়ে ভালো। তাই প্রথমবারের মতো বরগুনায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের বৃহত্তম ইলিশ উৎসব।

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, বরগুনার ইলিশকে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি করে তুলতে ও ইলিশের ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত এই জেলাকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকৃষ্ট করতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মৎস্যখাতের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ ও জাটকা ইলিশ সংরক্ষণে জনসচেতনতা তৈরিও এ উৎসবের লক্ষ্য।

Barguna-Pic-

বরগুনা-১ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, এ অনুষ্ঠানের প্রস্তাবনা প্রথমে সাংবাদিক বন্ধুরা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে এ উৎসব শুরু হয়। দেশে যত ইলিশই থাকুক না কেন বরগুনার মতো সুস্বাদু ইলিশ আর কোথাও নেই। এ কারণে বরগুনায় একটি ইলিশ গবেষণা কেন্দ্র ও আরেকটি ইলিশ অবতরণ কেন্দ্র স্থাপনের চেষ্টা চলছে।

মো. সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এমএমজেড/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।