বরিশালে ১৫ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ২০ ব্যক্তিকে ২১ হাজার জরিমানা
লকডাউনে বিনাপ্রয়োজনে ঘোরাফেরা ও দোকান খোলা রাখা ও মাস্ক না পরার দায়ে বরিশাল নগরীতে অভিযান চালিয়ে ১৫টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ২০ জন ব্যক্তিকে ২১ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার (৫ মার্চ) সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নগরীর বিভিন্নস্থানে জেলা প্রশাসনের পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বাধীন পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পৃথক অভিযানে এ জরিমানা করা হয়। তবে এতে খুব একটা প্রভাব পড়েনি মানুষের মাঝে।
রাস্তাঘাটে অবাধে চলাচল করছেন মানুষজন। সড়কজুড়ে রিকশা-ভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজিচালিত থ্রিহুইলার যানের আধিক্য। নগরীর অলি-গলির ও পাড়া মহল্লার মধ্যে খাবার হোটেল, সেলুন সেলুন-মুদি-চায়ের দোকানসহ অনেক দোকান ছিল খোলা। দোকানে বসে মানুষ সমানে গল্প করছে। আড্ডা দিচ্ছে।
অন্যদিকে বরিশালের মানুষের কেনাকাটার একটি বড় কেন্দ্র চকবাজার-কাঠপট্টি-লাইনরোড-পদ্মাবতি। অন্যান্য দিনে এখানে ক্রেতাদের কমবেশি ভিড় থাকে। সোমবার (৫ মার্চ) দুপুরে চকবাজার এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে বিপণি বিতানগুলোর সামনে ক্রেতাদের ভিড় নেই।
বিপণি বিতানগুলোর দোকানের সাঁটার লাগানো। তবে প্রায় দোকানের সামনেই একজন করে লোক দাঁড়িয়ে ছিলেন। পথচারীদের তারা ইশারা করছিলেন। কেনা-কাটা করবেন কি-না। কাছে গেলে দোকানের সাঁটার অল্প তুলে ভেতরে ঢুকানো হচ্ছিল।
এভাবে প্রায় দোকানেই ক্রেতা-বিক্রেতারা কেনাকাটা করছেন। বাইরে থেকে দেখে তা বোঝার উপায় নেই। তবে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অন্যান্য দিনের তুলনায় যান চলাচল ছিল কম। প্রধান প্রধান সড়কের পাশে থাকা অধিকাংশ মার্কেট, ছোট বড়ও দোকানপাটও বন্ধ ছিল।
এদিকে লকডাউন কার্যকরে জনসচেতনতা বাড়াতে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে পুলিশ সদস্যরা বেলা ১১টার দিকে নগরীতে র্যালি বের করেন। র্যালিটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
তাছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের পৃথক পাচটি অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলাপ্রশাসনের পাচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মারুফ দস্তগীর জানান, মাস্ক না পরা এবং বিনা প্রয়োজনে ঘোরাঘুরি করার দায়ে ১৩ জন ব্যক্তিকে দুই হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতাউর রাব্বী জানান, মাস্ক না পরার অপরাধে তিনি পাঁচ জনকে মোট তিন হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করেছেন।
নিার্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল হাই জানান, দুইটি প্রতিষ্ঠান ও এক ব্যক্তিকে দুই হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়া ত্রিপুরা জানান, একটি প্রতিষ্ঠান ও দুইজন ব্যক্তিকে এক হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করেছেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হুদা জানান, অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখায় ৬ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে এবং মাস্ক না পরার অপরাধে সাত জনকে তিনি জরিমানা করেছেন। জরিমানা আদায় হয় ১১ হাজার ৮৮০ টাকা।
নির্বাহী ম্যাজিস্টেট নাজমুল হুদা বলেন, নগরীর সবগুলো প্রবেশ পয়েন্টে চেক পয়েন্ট বসানো হয়েছে যাতে যৌক্তিক প্রয়োজন ছাড়া কেউ নগরীতে প্রবেশ করতে না পারেন। সোমবার লকডাউনের প্রথম দিন হওয়ায় প্রশাসন দন্ড বা জরিমানা দেয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা দেখিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেছে।
এমআরএম