শার্শায় করোনা ইউনিটের সামনেই চলছে টিকাদান
যশোরের শার্শা উপজেলা হাসপাতালে নানা অবস্থাপনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে চীনের সিনোফার্মের টিকাদান কার্যক্রম। হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ইয়োলো ও রেডজোনের সামনেই চলছে এ কার্যক্রম। এ ফ্লোর দিয়েই যাতায়াত করেন করোনা রোগীদের অভিভাবক ও চিকিৎসকরা। ফলে ঝুঁকিতে রয়েছেন টিকা নিতে আসা ব্যক্তিরা।
সোমবার (১২ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে হাসপাতালে শুরু হয় টিকাদান কর্মসূচি।
সরেজমিন দেখা যায়, করোনা পরীক্ষা ও প্যাথলজি বিভাগে আসা এবং টিকা নিতে আসা ব্যক্তিরা গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে ও বসে থাকছেন। এ সময় মানা হচ্ছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধি । নারী-পুরুষের জন্য নেই আলাদা কোনো লাইন।
রোগী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে হাসপাতাল কতৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
উপজেলার সম্বন্ধকাঠি গ্রামের ইদ্রিস আলী বলেন, ‘টিকা দেয়ার পর রক্তে তার পাজ্ঞাবির অনেকটা ভিজে যায়। পরে বিষয়টি টিকাদানকারীকে জানালে চিকিৎসা দিয়ে রক্ত বন্ধ করেন তিনি।’
উত্তর বুরুজ গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন,’ টিকা দিতে হাসপাতালে আসার পর জরুরি বিভাগ থেকে তিনতলায় যেতে বলা হয়। সেখানে টিকা কার্ড জমা নেয়ার পর অপেক্ষা করতে বলে। এ সময় দেখি, আমার সামনেই করোনা ইউনিটের ইয়োলো ওয়ার্ড ও দক্ষিণ পাশে রেডজোনের ওয়ার্ড। শুনলাম হাসপাতালে করোনা রোগীও আছে। ভয়ে ভয়ে টিকা দিয়ে বাসায় ফিরলাম। জানি না কী হবে?’
নারায়ণপুর গ্রামের লক্ষন কুমার বলেন, ‘সকালে হাসপাতালে এসেছি। দুই ঘণ্টায়ও টিকা পাইনি। অথচ অনেকে এসেই টিকা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। আর আমাদেরকে বসিয়ে রেখেছে। কখন টিকা পাবো জানি না। করোনা ইউনিটের ইয়োলো ও রেডজোনের সামনে বসে আছি, ভয়ও লাগছে।’
টিকা নিতে আসা শার্শার আমেনা খাতুন বলেন, ‘টিকা নিতে এসে দেখি মানুষের ভিড়। এর মধ্যে কীভাবে টিকা নেব?- সেটিই ভেবে পাচ্ছি না।’
বেনাপোলের সেলিম রেজা বলেন, ‘টিকা নিতে এসে হাসপাতালের অবস্থা দেখে ভয় লাগছে। মনে হচ্ছে, এর আগে করোনা নাহলেও এখন করোনা পজিটিভ রিপোর্ট নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে। করোনা টেস্ট, প্যাথলজি, টিকা দেয়ার স্থান সবই পাশাপাশি। একই ফ্লোর দিয়ে সবাই চলাচল করছে। কর্তৃপক্ষ এভাবে জায়গা নির্ধারণ করেছে কেন?-বুঝতে পারছি না।’
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ আলী বলেন, হঠাৎ করে রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। জায়গার অভাবে তৃতীয়তলায় ইয়োলো ও রেডজোনের সামনের ফ্লোরে টিকাদান কার্যক্রম চলছে। বিকল্প জায়গা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আগামীকাল থেকে দ্বিতীয়তলায় টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
জামাল হোসেন/এসএমএম/এমকেএইচ