ময়মনসিংহে সাড়া ফেলেছে বঙ্গবন্ধু রেল জাদুঘর

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: ০৬:৩৯ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২২

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর কয়েকটি জেলা ঘুরে এখন ময়মনসিংহে। বিনামূল্যে জাদুঘরটি দেখার সুযোগ পাওয়ায় তা ওই এলাকার সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। রেল জাদুঘরটির উদ্বোধনের পর এটি বিভিন্ন জেলা ঘুরে এখন ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) ময়মনসিংহে প্রদর্শনীর শেষদিনে শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এই ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরটি দেখতে আসেন। সেখানে তারা জাতির পিতার শৈশব-কৈশোর ও কর্মময় জীবনের ইতিহাস জানতে পারছেন। চার দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী শুরু গত বৃহস্পতিবার।

ধারাবাহিক ১২টি পর্ব নিয়ে রেলওয়ের একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় সাজানো হয়েছে এই জাদুঘর। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল এই জাদুঘর।

জাদুঘরটিতে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত চশমা, মুজিব কোট, টুঙ্গিপাড়ার সমাধিস্থলসহ ১৩টি ঐতিহাসিক নিদর্শনের রেপ্লিকা রয়েছে। এছাড়া রয়েছে দেশের স্বাধীনতা ও গৌরবের প্রতীক জাতীয় স্মৃতিসৌধসহ মুক্তি সংগ্রামের দুর্লভ সবচিত্র। রয়েছে বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লেখা চিঠি। জাদুঘরের বহিরাবরণ সজ্জিত করা হয়েছে ৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ধারাবাহিক সংগ্রামের চিত্রিত ম্যুরালের মাধ্যমে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এই জাদুঘর সাজানো হয়েছে। এতে রয়েছে জাতির পিতার শৈশবের দিনগুলো, পর্যায়ক্রমে তার ছাত্রজীবন, বেড়ে ওঠা, মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মাধ্যমে গণমানুষের প্রাণের নেতা হয়ে ওঠা, ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক হিসেবে তার অবদান, অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। মিথ্যা মামলা ও কারাভোগের করুণ চিত্র, তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম, বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ছয় দফা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীন দেশ পুনর্গঠনে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ।

প্রদর্শনীর প্রতিটি কনটেন্ট নির্মাণ করা হয়েছে ভিডিও এবং স্থিরচিত্রের সমন্বয়ে। কোচের এক প্রান্তে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণসহ গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত গান প্রচার করা হচ্ছে। এতে রয়েছে, বঙ্গবন্ধুর ওপর রচিত গুরুত্বপূর্ণ বই। এছাড়া রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ওপর রচিত বিভিন্ন শিশুতোষ সাহিত্যকর্ম।

জেলার গৌরীপুর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেল জাদুঘর দেখতে এসেছেন অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পিয়েল আহমেদ। তিনি বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরে এই জাদুঘর দেখতে এসেছি। রেল জাদুঘরে পরিদর্শন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে অজানা অনেক কিছু জানতে পারছি। এই ব্যবস্থা চালু থাকলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারবে।

তারাকান্দা থেকে আসা স্নাতক শেষবর্ষের শিক্ষার্থী আলী রেজা বলেন, এই জাদুঘর পরিদর্শন করে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বেশকিছু বিষয় জানতে পেরেছি। বিশেষ করে এখানে দেশের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসার নিদর্শন ফুটে উঠেছে।

নেত্রকোনা থেকে দেখতে আসা শিক্ষার্থী সৌরভ সরকার বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেল জাদুঘর চালু হওয়াতে তার বিষয়ে অজানা অনেক কিছু জানতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধুকে জানার জন্য এমন একটি ব্যবস্থা করায় সরকারকে ধন্যবাদ এবং আমাদের দাবি এটা চালু থাকুক। এতে করে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে জানতে পারবে।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট মো. জাহাঙ্গীর আকন্দ বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন, দেশপ্রেম, দেশের জন্য ত্যাগ সম্পর্কে মানুষকে জানানোর জন্য এই রেল জাদুঘরের আয়োজন করা হয়েছে। এরই মধ্যে জেলায় রেল জাদুঘর সাড়া ফেলেছে এবং অনেক দর্শনার্থী নিয়মিত পরিদর্শন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য ছিল এই জাদুঘরের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে মানুষকে জানানো। সেই উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।

মঞ্জুরুল ইসলাম/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।