মাকে কাঁধে নিয়ে আর ঘুরতে হবে না মোস্তাকিনের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক রংপুর
প্রকাশিত: ০১:৫৮ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২২
পক্ষাঘাতে আক্রান্ত মায়ের জন্য হুইলচেয়ার পেলো মোস্তাকিন

শিশু মোস্তাকিন, বয়স ১৩ বছর। ছয় মাস বয়সে বাবা গোলাম মোস্তফাকে হারায় সে। পাঁচ বছর আগে তার মা আজিদা বেওয়া পক্ষাঘাতে (প্যারালাইসস) আক্রান্ত হন। বড় বোনের বিয়ের পর মা ও সংসারের দায়িত্ব কাঁধে পড়ে মোস্তাকিনের। হাঁটতে চলতে পারেন না মা। তাই বাধ্য হয়ে মাকে কাঁধে নিয়েই শহর-গ্রাম ঘুরে ভিক্ষাবৃত্তি করে সে।

মোস্তাকিনের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শ্যামপুর গোপালপুর গুচ্ছ গ্রামে। তার এমন দুর্ভোগ ও দুর্দশার কথা জানতে পেরে এগিয়ে আসেন সহকারী টাউন সাব ইন্সপেক্টর (এটিএসআই) শেখ মোস্তাফিজুর রহমান।

রোববার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় রংপুর প্রেস ক্লাব চত্বরে আজিদা বেওয়া ও তার ছেলে মোস্তাকিনের হাতে একটি হুইলচেয়ার তুলে দেন তিনি।

jagonews24

শিশু মোস্তাকিন জানায়, ‘পাঁচ বছর ধরে মাকে কাঁধে নিয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভিক্ষাবৃত্তি করছি। এতে যা আয় হয় তা দিয়েই দিন পার করতে হচ্ছে।’

আজিদা বেওয়া বলেন, ‘স্বামীর মৃত্যুর পর অভাবের সংসার খুব কষ্ট করে চলছিল। পাঁচ বছর আগে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হই। হাঁটাচলা করতে না পারায় জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়ে শিশু সন্তানের কাঁধে চড়ে ভিক্ষাবৃত্তি জীবন শুরু করি। আমাদের এমন দুর্ভোগের কথা জানতে পেরে পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান একটি হুইলচেয়ার দিয়েছেন। এতে ভীষণ উপকার হবে। ছেলেকে আর কষ্ট করে আমাকে কাঁধে নিয়ে ঘুরতে হবে না।

এটিএসআই শেখ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে শিশু মোস্তাকিন ও তার মায়ের কষ্ট লাঘবে পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। নিজ উদ্যোগে সামর্থ্য অনুযায়ী এসব মানুষদের সহায়তার চেষ্টা করি। সবাই যদি একটু একটু এগিয়ে আসি, তাহলে সমাজে অসহায় মানুষগুলো দুঃখ কষ্ট ভুলে একটু ভালো অবস্থায় ফিরতে পারবে।

জিতু কবীর/এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।