ছাত্রলীগ নেতার গাঁজা সেবনের ভিডিও ভাইরাল, তদন্তে কমিটি

রাজবাড়ী সরকারি কলেজের বিদ্যাসাগর ছাত্রাবাসে এক ছাত্রলীগের নেতার গাঁজা সেবনের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
একইসঙ্গে অভিযুক্ত বিদ্যাসাগর ছাত্রাবাস শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পংকজ দাস, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজল পাল, অমিত বিশ্বাস, হৃদয় বিশ্বাস, অমিত ঘোষ ও দিব্য রায়কে তদন্ত কার্যক্রম চলাকালীন হোস্টেলের বাইরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা খাতুন তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কলেজের দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী আবু হোসাইনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের এ কমিটি করা হয়। কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরিফুর রহমান ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এ কে এম আজাদুর রহমান।
৩৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিদ্যাসাগর ছাত্রাবাস শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পংকজ দাস কলকে (গাঁজা সেবনের উপকরণ) দিয়ে আয়েশি ভঙ্গিতে গাঁজা সেবন করছেন। পাশে দুজন তাকে সহযোগিতা করছেন। গাঁজা সেবনের একপর্যায়ে তিনি নিজের মাথায় থাপ্পড় দিচ্ছেন। এ তিনজনের বাইরে আরেকজন সিগারেট টানছেন। তবে তাকে দেখা যাচ্ছে না। একজন সামনে থেকে গাঁজা সেবনের দৃশ্য ভিডিও করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, পংকজ দাসের গাঁজা সেবনের বিষয়টি কলেজের অনেক শিক্ষার্থী জানেন। তিনি ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতা। এ কারণে কেউ প্রতিবাদ করেন না। সাধারণত ছাত্রাবাসের কমনরুমে (টেলিভিশনের কক্ষ) গাঁজা সেবন করা হয়। কখনো কখনো অন্যান্য শিক্ষার্থীদের কক্ষে গিয়েও গাঁজা সেবন করেন তিনি। বাধা দিলে নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাহাত শেখ বলেন, ‘এ ঘটনা ছাত্রলীগের সুনাম নষ্ট করছে। আমরা নিজেরাই বিষয়টি তদন্ত করছি। এতে অনেকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে। তবে ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুন না কেন, সবার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তদন্ত কমিটির সদস্য প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরিফুর রহমান বলেন, ‘সোমবার সকালে এ বিষয়ে পত্র পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে অভিযুক্ত ছয়জনকে ছাত্রাবাসের বাইরে থাকতে বলা হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা খাতুন বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বিদ্যাসাগর ছাত্রাবাস শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পংকজ দাস জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। পদ-পদবির কারণে আমি রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার।’
রুবেলুর রহমান/এসআর/এমএস