যন্ত্রের দাপটে বিলুপ্তপ্রায় হাতে ভাজা মুড়ি

এম এ মালেক
এম এ মালেক এম এ মালেক , জেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৪:০৬ পিএম, ২১ মার্চ ২০২৩

সিরাজগঞ্জে যন্ত্রের দাপটে কমেছে হাতে ভাজা মুড়ির কদর। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী শুক্রবার (২৪ মার্চ) থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। দিনভর রোজা রেখে সন্ধ্যায় ইফতারির অন্যতম অনুষঙ্গ মুড়ি। কারখানাগুলোতে এখন চলছে মুড়ি উৎপাদনের ধুম।

কারখানায় তৈরি মুড়ির চেয়ে স্বাদ ও মানে সেরা হাতে ভাজা মুড়ি। কিন্তু সিরাজগঞ্জ শহর ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কারখানায় বাণিজ্যিকভাবে মুড়ি উৎপাদনের ফলে হাতে ভাজা মুড়ি এখন বিলুপ্তপ্রায়। এতে বিপাকে পড়েছেন হাতে ভাজা মুড়ির কারিগররা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের শেলবলিশা বাজারে বাণিজ্যিকভাবে মেসার্স তা-সিন ফুডস প্রোডাক্টস হরিণ মার্কা মুড়ি উৎপাদন করছে। কারখানায় ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক এ মুড়ি উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কারখানার মালিক সবুজ সেখ জাগো নিউজকে বলেন, তার কারখানায় প্রতিদিন গড়ে ১ টন মুড়ি উৎপাদন করা হয়। তবে রমজান উপলক্ষে আরও বেশি উৎপাদন করা হচ্ছে।

তিনি জানান, তার উৎপাদিত মুড়ি প্যাকিং করার পর নিজ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।

অপরদিকে রায়গঞ্জ উপজেলার নিমগাছী এলাকায় হাতে মুড়ি ভাজার কয়েকজন কারিগর জাগো নিউজকে জানান, কারখানায় রাসায়নিক সার মিশিয়ে মুড়ি সাদা করা হয়। যেটা হাতে ভাজা মুড়িতে সম্ভব নয়। হাতে ভাজা মুড়ি অনেক সময় চালের কারণে সাদা কম হয়। সেজন্য সিংহভাগ মানুষ এখন বাজার থেকে বেশি সাদা মুড়ি ক্রয় করে। তবে সেই মুড়িতে প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যায় না। আমরা আগে বিক্রির উদ্দেশ্যে মুড়ি ভাজলেও এখন আর ভাজি না।

একই উপজেলার সোনাখাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গৃহবধূ জোসনা খাতুন তার রান্নাঘরে একটি চুলায় চাল ভাজছেন। অন্য চুলায় গরম করছেন বালু। এরপর একটা পাত্রে গরম বালু ও চাল ঢেলে দেন। এ সময় আরেকজন নাড়তে থাকেন। আর এভাবেই চাল ফুটে মুড়ি হয়। পরে বাড়ির অন্য নারীরা এ মুড়ি চালনির ওপর রেখে ঘোরাতে থাকেন। তখন বালু নিচে পড়ে যায়। আর মুড়ি থাকে চালনিতে। এরপর পরিষ্কার মুড়ি সংরক্ষণ করেন তারা।

ভাজা মুড়ি বিক্রি করা হবে কি না প্রশ্ন করলে জোসনা খাতুন বলেন, রমজান মাসে নিজেদের ইফতার করার জন্য এ মুড়ি ভাজা হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ শহরের মুদি দোকানি শামীম সেখ জাগো নিউজকে বলেন, আমরা কারখানার তৈরি ও হাতে ভাজা মুড়ি দুটোই বিক্রি করি। তবে ক্রেতারা বেশি পরিষ্কার ও সাদা মুড়ি চান। আর ক্রেতাদের কথা চিন্তা করেই হাতে ভাজা মুড়ির চাইতে কারখানার মুড়িই বেশি রাখা হয়।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।