জৌলুস হারিয়েছে ব্যস্ততম দৌলতদিয়া ঘাট

রুবেলুর রহমান
রুবেলুর রহমান রুবেলুর রহমান , জেলা প্রতিনিধি রাজবাড়ী
প্রকাশিত: ০৮:৫৫ পিএম, ২৫ জুন ২০২৩

পদ্মা সেতু চালুর এক বছরেই পাল্টে গেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমঞ্চলের ২১ জেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত ব্যস্ততম চিরচেনা রাজবাড়ী গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাটের চিত্র। ব্যস্ততম এ ঘাটটিতে এখন আর তৈরি হয় না দীর্ঘ যানবাহনের সিরিয়াল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থাকতে হয় না যাত্রীদের। এখন মুহূর্তের মধ্যে ফেরির দেখা পাচ্ছে যানবাহনগুলো।

এ ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপারের সংখ্যা কমেছে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। এছাড়া ঘাটকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা খাবার হোটেলসহ অন্যান্য বেশির ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্রেতার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার হোটেল মালিক-শ্রমিক, মোটর শ্রমিক ও হকার। এতে জৌলুস হারিয়ে এখন অনেকটাই নিস্তেজ হয়ে পড়েছে দৌলতদিয়া ঘাট।

আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গায় সেপ্টেম্বরে চলবে ট্রেন 

jagonews24

জানা গেছে, দৌলতদিয়া প্রান্তের সাতটি ফেরিঘাট থাকলেও এখন চালু রয়েছে মাত্র চারটি। পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে যানবাহনের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ফেরির সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনলেও গাড়ির জন্য অপেক্ষায় থাকে ফেরি। নেই আগের মতো দালাল চক্র ও ছিনতাইকারী। ভাটা পড়েছে দৌলতদিয়া রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন দেশের বৃহত্তম যৌনপল্লিতে। সেখানে নেই আগের মতো রমরমা ভাব। সব মিলিয়ে দুর্ভোগ দূর হয়েছে যাত্রীদের। স্বস্তি ফিরেছে এরুট ব্যবহারকারী যানবাহন চালক ও যাত্রীদের। পদ্মা সেতু চালুর আগে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে প্রতিদিন সাড়ে ৩ থেকে ৬ হাজার যানবাহন পারাপার হলেও বর্তমানে পারাপার হচ্ছে মাত্র দেড় থেকে ২ হাজার যানবাহন।

দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান, সোহেল রানা ও হকার শহিদুল, শাজাহানসহ কয়েকজন জানান, পদ্মা সেতু চালুর পর থেকেই যানবাহন পারাপার কমেছে প্রায় ৭০ শতাংশ। যে কারণে দৌলতদিয়া ঘাট এখন প্রায় যাত্রীশূন্য। যাত্রীদের অভাবে তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বেশির ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। যে কারণে এখন তারা বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করছেন।

আরও পড়ুন: ঢাকার যানজটে মাদারীপুর থেকে অফিস করার স্বপ্ন অধরা 

তারা আরও জানান, মাত্র কয়েকটি খাবার হোটেল ও মুদি দোকান চালু রয়েছে। কিন্তু আগের মতো ব্যবসা নেই। এখন খুব সমস্যায় আছেন।
যানবাহনের চালক মিন্টু শেখ, দেলোয়ার হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ একাধিক চালক বলেন, এখন দৌলতদিয়া ঘাটে আগের মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টার সিরিয়ালে থাকতে হচ্ছে না। এতে যাত্রী ও তাদের ভোগান্তি দূর হয়েছে। এই ভোগান্তি দূর হয়েছে পদ্মা সেতুর কারণে।

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই নৌরুটে যানবাহনের সংখ্যা কমেছে। সেই সাথে বন্ধ হয়ে গেছে বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মহীন হয়ে পড়েছে বহু হকার। যানবাহন কমার কারণে এখন ঘাটে আর সিরিয়াল তৈরি হয় না। সরাসরি যানবাহনগুলো ফেরির দেখা পাচ্ছে। যানবাহনের জন্য এখন ফেরি অপেক্ষায় থাকে। বর্তমান এই নৌরুটে চারটি ঘাট চালু।

রুবেলুর রহমান/এসএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।