দৌলতদিয়া ঘাটে নেই জট, নির্বিঘ্নে পার হচ্ছে পশুবাহী ট্রাক
এবার কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবহার করে পদ্মা পাড়ি দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে যাচ্ছে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক। এতে খুশি গরু ব্যবসায়ী ও ট্রাকচালকরা।
এদিকে, ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র দুইদিন। ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই ঢাকামুখী পশুবাহী ট্রাকের চাপ বাড়ছে। তবে দীর্ঘ অপেক্ষা ছাড়াই সরাসরি উঠে গন্তব্যে যেতে পারছে ট্রাকগুলো।
অপরদিকে, প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে রাজধানী ছেড়ে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। দৌলতদিয়া প্রান্তে পর্যাপ্ত যানবাহন থাকায় বিভিন্ন বাহনে করে গন্তব্যে যাচ্ছে ঘরমুখো মানুষ।
সোমবার (২৬ জুন) বিকেলে দৌলতদিয়াঘাট ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, অতীতে ঈদ এলেই দৌলতদিয়া ঘাটে ভোগান্তির সীমা থাকতো না। তবে গত বছরের ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সেই ভোগান্তি কমে এসেছে অনেকটাই। এখন দৌলতদিয়ার সড়কে হয় না দীর্ঘ যানবাহনের সাড়ি। তবে ঈদে স্বাভাবিকের চেয়ে যানবাহনের চাপ বাড়ে এ নৌরুটে। এতে সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তির আশঙ্কা। আসন্ন কোরবানির ঈদ সামনে রেখে এরইমধ্যে দৌলতদিয়া ঘাটে পশুবাহী ট্রাকের সংখ্যা বাড়লেও দীর্ঘ অপেক্ষা ও ভোগান্তি ছাড়াই ফেরি পার হতে পাড়ছে যানবাহন ও গরুবাহী ট্রাক। এতে খুশি গরুর মালিক, ব্যাপারী ও গাড়ির চালকরা।

বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, এবার ঈদে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ছোট-বড় ১৮টি ফেরি, ২০টি লঞ্চ ও ১০টি স্পিডবোট চলাচল করবে। এছাড়া ঘাটের যানজট নিরসনে ঈদের আগে ও পরে মোট সাতটি দিন পশুবাহী ও জরুরি পচনশীন পণ্যবাহী ট্রাক ব্যাতিত সাধারণ ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে। এছাড়া চাঁদাবাজ, দালাল নির্মূলে ঘাট এলাকাসহ সড়কে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য।
একাধিক ট্রাকচালক জানান, ঘাটে দালাল ছাড়াই নিজেরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে ফেরি পারাপারের টিকিট কিনতে পারছেন। যানজট মুক্তভাবে নিরাপদে ফেরিতে উঠতে পেরে তারা খুশি।
কুষ্টিয়া থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী আ. মান্নান মিজি জানান, তিনি ১৮টি গরু নিয়ে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। মহাসড়কে কোনো ঝামেলা হয়নি। ফেরিঘাটেও কোনো চাঁদাবাজি হচ্ছে না।
গরুবোঝাই ট্রাক চালক হৃদয় মৃধা বলেন, সড়কে কোনোপ্রকার ভোগান্তি হয়নি। দৌলতদিয়াতেও এবছর কোনো যানজট নেই। সরাসরি ফেরিতে উঠতে পারছেন। আগে ঘাটে সমস্যার জন্য সময়মতো গরু হাটে নিতে না পারতেন না মালিকরা। কিন্তু এবার সঠিক সময়ে ভোগান্তি ছাড়াই গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক নুর আহাম্মাদ ভূঁইয়া বলেন, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৮টি ফেরি চলাচল করছে। দৌলতদিয়া প্রান্তে চারটি ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। আশা করছি, এবারের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন হবে। বর্তমানে পশুবাহী ট্রাকগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে। চাঁদাবাজি রোধে ট্রাকের হেলপার অথবা চালক ছাড়া কাউকে কোনো টিকিট দেওয়া হচ্ছে না।
গোয়ালন্দঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, পশুবাহী ট্রাক থেকে কেউ যেন অতিরিক্ত টোল অথবা চাঁদাবাজি না করতে পারে এ বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি।
রুবেলুর রহমান/এমআরআর/এএসএম