জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে একগুচ্ছ আয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২৮ পিএম, ১৮ জুলাই ২০২৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে মাসব্যাপী একগুচ্ছ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আলোকচিত্র, চিত্রকর্ম ও ভিডিও প্রদর্শনী, শিল্পকর্মগুলোর ক্যাটালগ প্রকাশ, সংগীত পরিবেশনা, গণঅভ্যুত্থান নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা, শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাত এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট ও ভিডিও শেয়ার। এছাড়া অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কোলাবোরেশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গ্রাফিতি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ।

শুক্রবার (১৯ জুলাই) ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তির তথ্যমতে, গত ১৬ জুলাই রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাসে গণঅভ্যুত্থান স্মরণে বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।

এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিবিশন গ্যালারিতে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ক্লাব মনন-এর শিক্ষার্থীদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন লার্নিং অ্যান্ড টিচিং ইনোভেশন সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির।

এরপর ‘রেড জুলাই’ শীর্ষক প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। প্রদর্শনীতে ১০০টির বেশি আলোকচিত্র এবং চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয়। এসব শিল্পকর্মে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মীদের অবদান তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের রাজপথে বিক্ষোভ এবং ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। এ প্রদর্শনীটি ৫ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি কালচারাল ক্লাব। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মীরা অংশ নেন। এরপর একটি বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের চেতনা এবং এ আন্দোলনে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি কমিউনিটির সদস্যদের অসামান্য অবদান তুলে ধরা হয়।

আলোচনায় অংশ নেন উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। তিনি আন্দোলনে গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং তাদের খোঁজখবর নেন।

চীনে অবস্থান করা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার ড. ডেভিড ডাউল্যান্ড এক ভিডিও বার্তায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তরুণদের নেতৃত্ব বিষয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। এ প্রজন্মকে অবশ্যই নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে হবে। নেতৃত্বের অর্থ হলো মানবতা, সহানুভূতি ও অন্যদের জীবন পরিবর্তনে সুচিন্তিত এবং ইতিবাচক অবদান রাখা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার বলেন, সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে দেশকে ভালোবাসতে হবে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির আদর্শকে সামনে রেখে আমাদের সবাইকে মানবতার সেবায় একসঙ্গে কাজ করতে হবে। জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে অনেকেই তাদের জীবন দিয়েছেন, যাতে আমরা তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারি। আমরা যদি তা না পারি, তাহলে সেটা তাদের প্রতি চরম অবিচার করা হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার আরিফুল ইসলাম, ডিরেক্টর অব কমিউনিকেশনস খায়রুল বাশার, স্কুল অব ফার্মেসি ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ইউসুফ হায়দার, প্রক্টর রুবানা আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ফারহান হক প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে দুইজন শিক্ষার্থী অংশ নেন যারা অভ্যুত্থানের সময় ছররা গুলিতে তাদের একটি করে চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। আলোচনা পর্বটি সঞ্চালনা করেন স্টুডেন্ট লাইফের জয়েন্ট ডিরেক্টর তাহসিনা রহমান।

এদিকে, পুরো জুলাই মাসজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া বিভিন্ন পোস্ট ও ভিডিও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে শেয়ার করা হবে। এছাড়া শীর্ষস্থানীয় জাতীয় দৈনিকে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির দুজন শিক্ষক সাক্ষাৎকার দেবেন, যেখানে তারা অভ্যুত্থানের সময়কার অভিজ্ঞতা ও শিক্ষার্থীদের ভূমিকা তুলে ধরবেন। এ সাক্ষাৎকারগুলোও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা হবে।

অন্যদিকে আগামী ২৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত সড়কে দেয়ালচিত্র ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি আর্ট অ্যান্ড ফটোগ্রাফি সোসাইটির সদস্যরা।

এএএইচ/এমএএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।