সংশোধিত ‘আদর্শ ছেলে’ যাচ্ছে প্রতিটি স্কুলে


প্রকাশিত: ০৫:১৯ এএম, ১৬ মার্চ ২০১৭

ব্যাপক সমালোচনার মুখে অবশেষে প্রাথমিকের তৃতীয় শ্রেণির বাংলা বইয়ের কবি জীবনানন্দ দাশের মা কুসুমকুমারী দাশের ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতাটি সংশোধন করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই কবিতাটির সংশোধিত কপি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে দেশের সব স্কুলে পাঠানো হবে।

শিক্ষা বছরের আড়াই মাস পর জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কবিতাটি বিশেষভাবে সংশোধনের এ উদ্যোগ নিয়েছে।

তবে আদর্শ ছেলের বিকৃতি সংশোধন হলেও সংশোধিত হচ্ছে না অন্যান্য কয়েকটি ভুল। ফলে থেকেই যাচ্ছে তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যবই ‘হিন্দু শিক্ষা’ বইয়ের পেছনে লেখা  Do not Heart Anybody, প্রথম শ্রেণির বইয়ে ছাগলকে গাছে চড়িয়ে আম খাওয়া, ও-তে ওড়না, অষ্টম শ্রেণির আনন্দপাঠে সাতটি গল্পের সবগুলো বিদেশি লেখকের গল্প, উপন্যাস অবলম্বনে লেখার মতো ভুলগুলো।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, সংশোধনীর বিষয়টি আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাই। সেখান থেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এখন পাঠ্যবইয়ের ভুলগুলো সংশোধন করে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের মেইলে বা প্রিন্ট আকারে পাঠানো হবে।

জানা যায়, এনসিটিবির প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে নানা ভুল আর অসংগতি নিয়ে চলতি বছর সারা দেশে বির্তকের ঝড় ওঠে। বিষয়টি নিয়ে বিপাকে পড়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবির সংশ্লিষ্টরা। পরে তড়িঘড়ি করে আলাদা দু’টি তদন্ত কমিটি করা হয়। এনসিটিবির তদন্তকাজ শেষ হওয়ার আগেই দুই কর্মকর্তাকে ওএসডি ও তদন্তকাজ শেষে গ্রাফিক ডিজাইনারকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

Book
অন্যদিকে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রূহি রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির মেয়াদ কয়েক দফায় বৃদ্ধি করা হয়। পাঠ্যবই কেলেঙ্কারির মূলহোতা শনাক্তে সাত কার্যদিবস মেয়াদের এ কমিটি পুরো দুই মাস সময়ক্ষেপণ করলেও নতুনভাবে আর কাউকে শনাক্ত করেননি। এ কারণে অনেকের মধ্যে তদন্তকাজ নিয়েও নানা প্রশ্নের উদয় হচ্ছে।

তবে এ বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব রুহি রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এনসিটিবি যাদের অভিযুক্ত করেছে তাদের অবহেলায় এমন ভুল হয়েছে। আমরা নিবিড়ভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছি। পাশাপাশি পররর্তী বছরগুলোতে এমন ভুল যেন আর না হয় সে বিষয়েও তদন্ত প্রতিবেদনে পারামর্শ দেয়া হয়েছে।

এদিকে, পাঠ্যবইয়ের এসব ভুলকে ‘ভুল’ নয় বরং বিচ্যুত বলে মনে করেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা।

তিনি বলেন, প্রতিবছর বইয়ের মধ্যে বিভিন্ন ভুল ধরা পরে। পরবর্তী বছর আবার নতুন বই করার সময় তা পরিমার্জন করা হয়। তাই বানান ভুল ও অসংগতিগুলো চলমান প্রক্রিয়ায় সংশোধন করা হবে। তবে শুধু কুসুমকুমারী দাশের কবিতাটি বিশেষভাবে সংশোধন করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হবে। তারা সেগুলো স্কুলে পাঠিয়ে দেবেন। শিক্ষকরা সে অধ্যায় পড়ানোর সময় সংশোধন কপি দেখে পড়াবেন।

রাজধানীর মনিপুর স্কুলের বাংলা শিক্ষক মজিবুর রহমান বলেন, পাঠ্যবইয়ে ভুল নিয়ে আমরা বিপাকে রয়েছি। কোনটি ভুল আর কোনটি শুদ্ধ, ক্লাসে পড়ার সময় সংশয়ে থাকতে হয়। তিনি দ্রুত পাঠ্যবইয়ের ভুলগুলো সংশোধনের দাবি জানান।

এমএইচএম/জেডএ/এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।