কোচিংয়ে নিতে এ কেমন আচরণ শিক্ষকের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:২২ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

রাজধানীর মোহাম্মদপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে স্কুলের নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ এবং বাসায় কোচিং করতে চাপ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন। অভিযোগপত্রের একটি কপি জাগো নিউজের হাতেও এসেছে। তবে প্রধান শিক্ষক অভিযোগপত্র হাতে পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলটির কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষক মিজানুর রহমান ছাত্রীদের ক্লাসে ঠিক মতো পড়ান না। ছাত্রীদের ক্লাসে কঠিন কঠিন প্রশ্ন করে ভড়কে দেন অযথা বকাঝকা করেন এবং ভয়ভীতি দেখান। ছাত্রীদের তার বাসায় কোচিংয়ের ব্যাচে পড়ার জন্য ক্লাসেই বলেন ওই শিক্ষক। বাসায় পড়তে না গেলে পরীক্ষায় নম্বর কম দেবেন বলেও ভয়ভীতি দেখান। শুধু তা-ই নয়, অভিভাবকদের কাছেও ফোন করে ‘তাদের সন্তান লেখাপড়ায় ভালো নয়’ উল্লেখ করে বাসায় পড়তে দেয়ার কথা বলেন।

স্কুলের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলে, ‘মিজান স্যার ক্লাসে আমাদের ভালোভাবে অঙ্ক করান না। কিছু না বুঝলে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ধমক দিয়ে বসিয়ে রাখেন। বাসায় ব্যাচে পড়তে যেতে বলেন। ব্যাচে পড়তে না গেলে অভিভাবকদের ফোন করে বলেন, ‘আমরা ঠিক মতো লেখাপড়া করি না। ব্যাচে পড়তে পাঠাতে বলেন।’

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

একই শ্রেণির আরও এক ছাত্রী বলে, ‘জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট থাকলেও আমার বাবাকে গণিতের স্যার ফোন করে বলেছেন, আমি নাকি পড়ালেখা করি না। তার বাসায় যেন ব্যাচে পড়তে যাই, এজন্য বাবাকে চাপও দিয়েছেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, ‘কয়েক দিন আগে গণিত শিক্ষক মো. মিজান ফোন করে আমার মেয়েকে তার বাসায় পড়তে পাঠাতে বলেন। যদি তা না করি তাহলে মেয়ের ফল খারাপ হবে বলে হুমকিও দেন।’

তিনি আরও বলেন, ওই শিক্ষক আরও বলেন, আপনার মেয়ের পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করি, খাতার উত্তরপত্র মূল্যায়ন করি, পরামর্শ না শুনলে খারাপ হবে। তবে বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জানালেও তিনি আমলে নেননি।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মোহাম্মদপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জাগো নিউজকে বলেন, ‘অঙ্কের শিক্ষক মো. মিজান দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের নানাভাবে বাসায় গিয়ে পড়তে বাধ্য করছেন। অভিভাবকদের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে সন্তানদের কোচিংয়ে আসার কথা বলেন। যদি কেউ না আসে তবে অভিভাবক ও ছাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি প্রধান শিক্ষক জানার পরও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। প্রধান শিক্ষকের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ওই শিক্ষক কোচিং বাণিজ্য করে যাচ্ছেন। তার কারণে ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। আমি ক্লাসে ঠিক মতো পড়াই। আমি ধার্মিক মানুষ। কোনো অন্যায় কাজ করি না।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে অভিযোগের কোনো চিঠি পাননি বলে জানান প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন ফরহাদ। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে ম্যানেজিং কমিটির সভায় এক অভিভাবক প্রতিনিধি শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তিনি নাকি বাসা ভাড়া নিয়ে কোচিং করান। এ অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

‘এমন শিক্ষকের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হয়’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এমএইচএম/আরএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।