গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষায় বাধা বড় পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়

মুরাদ হুসাইন
মুরাদ হুসাইন মুরাদ হুসাইন , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৫৬ পিএম, ০৩ নভেম্বর ২০২০

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্রক্টরড রিমোট এক্সামিনেশন সিস্টেম’ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া ঠিক হবে না বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

তাদের মতামতের ভিত্তিতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বুয়েট) বড় পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় এ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে আপত্তি জানিয়েছে।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) অনুষ্ঠিত এক পর্যালোচনা সভায় বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশে  সফটওয়্যার দিয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার মতো সক্ষমতা এখনও তৈরি হয়নি। এই সফটওয়্যার দিয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। নেটওয়ার্ক ও টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন সঠিক নাও হতে পারে।

তাদের মতে, বিশ্বের কোনো দেশে একটি মাত্র সফটওয়্যার দিয়ে বড় পরিসরে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয় না। সফটওয়্যার দিয়ে যদি ভর্তি পরীক্ষা নিতে হয় সেক্ষেত্রে ইউজিসিকে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে দিতে কমিটি সুপারিশ করে।

জানতে চাইলে ইউজিসি’র সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর জাগো নিউজকে বলেন, সশরীরে পরীক্ষা নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। বর্তমানে এদিকে গুরুত্ব দিয়ে এগোতে হবে। এটি গুচ্ছ পদ্ধতিতে হলে সবার জন্য সুবিধা। এতে ভোগান্তিও কমবে শিক্ষার্থীদের।

তিনি বলেন, ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে আসার সম্মতি জানালেও বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আসতে আপত্তি জানিয়েছে। ইতোমধ্যে সশরীরে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে তারা। বর্তমানে গুচ্ছ পদ্ধতিতে নেয়ার ব্যাপারে সোমবার (২ নভেম্বর) শিক্ষামন্ত্রী এ চার বিশ্ববিদ্যালয় ভিসিদের নিয়ে সভা করে নতুনভাবে আহ্বান জানিয়েছেন। তারা আসলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা সম্ভব হবে।

এদিকে, সোমবারের সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর তার উদ্ভাবিত ‘প্রক্টরড রিমোট এক্সামিনেশন সিস্টেম’ সফটওয়্যারের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, এই সফটওয়্যারটি মূলত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। এটি বর্তমান অবস্থায় অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার উপযোগী নয়।

জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, অনলাইনে সম্ভব নয় বলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করতে হবে। সব বিশ্ববিদ্যালয় আসলে এটি আরও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে কেন্দ্রীয়ভাবে দেড় থেকে দুই ঘণ্টার একটি পরীক্ষা আয়োজন করা যেতে পারে। ভর্তির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের স্বায়ত্তশাসন বজায় রেখে প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৮০ শতাংশ নম্বর পেলে আবেদন করতে পারবে, এমন শর্ত দিয়ে ভর্তি করতে পারে। বিশেষায়িতরা নির্ধারিত ভর্তি পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে বিভিন্ন কারিকুলাম যুক্ত করতে পারে। এভাবে স্বল্প সময়ে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করা সম্ভব বলে জানান তিনি।

এমএইচএম/এমএসএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।