ভারতের ওপর শুল্ক আরও বাড়ানোর হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:০৬ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০২৫
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী/ ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক ব্যর্থ হলে ভারতের ওপর শুল্ক আরও বাড়তে বলে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট

বুধবার (১৩ আগস্ট) ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, রাশিয়ার তেল কেনার জন্য আমরা ভারতের ওপর সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করেছি যদি পরিস্থিতি ভালো না হয়, তবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বা এই সেকেন্ডারি শুল্ক আরও বাড়তে পারে।

বেসেন্ট ইউরোপীয় দেশগুলোকেও এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করছেন, আর ইউরোপীয়রা পাশে বসে মন্তব্য করছে তিনি কী করবেন বা কীভাবে করবেন। ইউরোপীয়দেরও আমাদের সঙ্গে সেকেন্ডারি স্যাংশন অর্থাৎ নিষেধাজ্ঞায় যোগ দিতে হবে।

এর এক দিন আগে ফক্স বিজনেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট ভারতকে বাণিজ্য আলোচনায় ‘কিছুটা অনমনীয়’ বলে অভিহিত করেন। ট্রাম্প দাবি করেছেন, তার প্রশাসনের শুল্কনীতি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি শক্তিশালী করা ও বৈশ্বিক বাণিজ্যে ন্যায্যতা আনার অংশ। তিনি একাধিকবার ভারতকে ‘শুল্ক অপব্যবহারকারী’ বলেছেন ও এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির সঙ্গে ৪৫০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার কারণে ভারতের ওপর বিদ্যমান ২৫ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানা আরোপ করে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা করছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) ট্রাম্প সতর্ক করে দেন, মস্কো যদি শান্তিচুক্তিতে রাজি না হয় তবে গুরুতর পরিণতিভোগ করতে হবে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কার অ্যাংকারিজে ট্রাম্প ও পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে বৈঠক করবেন।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সস্তা রুশ তেল আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে ভারত। ২০২১ সালে যা ছিল ৩ শতাংশ, ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের মোট তেল আমদানির ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশে। এ প্রবণতা ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে টানাপোড়েনে ফেলেছে ও চলমান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি করেছে।

দিল্লি তাদের রুশ তেল কেনার পক্ষে যুক্তি দিয়েছে যে, একটি বড় জ্বালানি আমদানিকারক দেশ হিসেবে সস্তা জ্বালানি কিনে কোটি কোটি দরিদ্র ভারতীয়কে মূল্যবৃদ্ধির চাপ থেকে রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব।

দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা কয়েক মাস ধরে চলছে। মার্কিন আলোচক দল আগামী ২৫ আগস্ট ভারতে আসবে এই আলোচনার পরবর্তী ধাপ শুরু করতে। তবে কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যে আমদানি শুল্ক কমাতে ভারতের অস্বীকৃতি এ আলোচনায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

ট্রাম্পের ঘোষিত নতুন ৫০ শতাংশ শুল্ক ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। অনেক বিশেষজ্ঞ একে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য কার্যত বন্ধ করে দেওয়ার সমতুল্য বলে আখ্যা দিয়েছেন। এর ফলে ভারত এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি কর আরোপিত বাণিজ্য অংশীদার হয়ে যাবে এবং ভারতীয় টেক্সটাইল ও গহনার মতো রপ্তানিমুখী শিল্পখাত বড় ধাক্কা খাবে। এমনকি ভারতের প্রবৃদ্ধি প্রায় আধা শতাংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।