টাকার বদলে প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে খাওয়া যায় যে ক্যাফেতে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪২ পিএম, ২০ আগস্ট ২০২৫
ছবি: অম্বিকাপুর পৌরসভা

গরম গরম সমোসা, কাঠের বেঞ্চে বসে ধোঁয়া ওঠা থালায় ভাত, তরকারি আর ডাল খাওয়া যাবে প্লাস্টিকের বর্জ্য দিয়ে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে কোনো টাকা পরিশোধ করতে হবে না। এমন চিত্র দেখা যায় ভারতের ছত্তিশগড়ের আম্বিকাপুর শহরের গারবেজ (বর্জ্য) ক্যাফেতে।

গারবেজ ক্যাফেতে এক কেজি প্লাস্টিকের বদলে পাওয়া যায় একটি পূর্ণাঙ্গ মধ্যাহ্নভোজ—ভাত, দুটি সবজি, ডাল, রুটি, সালাদ আর আচার। আর আধা কেজি প্লাস্টিক জমা দিলে মেলে সকালের খাবার—যেমন ভাজা সমোসা বা বম্বাই স্টাইলের ভাড়া পাভ।

এই ক্যাফেটি পরিচালনা করছে অম্বিকাপুর পৌরসভা। ২০১৯ সালে চালু হওয়া এই অভিনব উদ্যোগের স্লোগান ছিল যত বেশি বর্জ্য, তত ভালো স্বাদ!

এই ক্যাফের পেছনের ভাবনা ছিল শহরের দুটি বড় সমস্যা একসঙ্গে মোকাবিলা করা—প্লাস্টিক দূষণ ও অনাহার। বিশেষ করে গৃহহীন ও র‍্যাগপিকারদের (যারা আবর্জনার মধ্যে ঘেঁটে জীবিকা চালান) উৎসাহ দেওয়া হয় রাস্তা বা ডাম্প থেকে প্লাস্টিক কুড়িয়ে এনে খাবার পাওয়ার জন্য।

রশ্মি মণ্ডল নামে এক স্থানীয় নারী বলেন, আগে এই প্লাস্টিক বিক্রি করে খুবই সামান্য টাকা পেতাম, এখন এগুলো দিয়েই পরিবারের জন্য খাবার জোগাড় করতে পারি। এতে আমাদের জীবন অনেক সহজ হয়েছে।

প্রতিদিন এই ক্যাফেতে প্রায় ২০ জনের মতো মানুষ খাবার খায়। যা শুধু পেট ভরায় না, পরিবেশও বাঁচায়।

স্বচ্ছ ভারত মিশনের কর্মকর্তা ঋতেশ সাইনি জানান, ২০১৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই ক্যাফে প্রায় ২৩ টন প্লাস্টিক সংগ্রহ করেছে, যা শহরের ল্যান্ডফিল বা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে যাওয়ার বদলে পুনর্ব্যবহারের পথে গেছে।

২০১৯ সালে এ শহরে যেখানে বছরে ৫.৪ টন প্লাস্টিক ডাম্পে যেত, ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ টনে। যদিও ২০২৪ সালে শহরের মোট প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ ছিল ২২৬ টন, যার বেশিরভাগই রিসাইকেল হয়ে যায়। এই ক্যাফে মূলত সেই অংশের বর্জ্য সংগ্রহ করে যা মূল সংগ্রহ ব্যবস্থার বাইরে থেকে যায়।

ক্যাফেতে কর্মরত শারদা সিং প্যাটেল বলেন, আমরা শুধু ক্ষুধা মেটাচ্ছি না, শহর পরিষ্কার রাখতেও সাহায্য করছি।

সূত্র: বিবিসি

এমএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।