নেপালে রাজতন্ত্র ফেরাতে একীভূত হচ্ছে ২ দল, নির্বাচনের আগে নতুন সমীকরণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:১৯ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
রাজতন্ত্রপন্থি নেতা রাজেন্দ্র লিংদেন, নবরাজ সুবেদী এবং কমল থাপা/ ফাইল ছবি: কাঠমান্ডু পোস্ট

নেপালে রাজতন্ত্র ফেরাতে একীভূত হচ্ছে দুই রাজনৈতিক দল রাজেন্দ্র লিংদেনের নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি (আরপিপি) এবং কমল থাপার নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি–নেপাল (আরপিপি–নেপাল)। উভয় দলের অভিন্ন রাজনৈতিক এজেন্ডা হলো নেপালকে আবার হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা এবং রাজতন্ত্র পুনর্বহাল করা।

২০০৬ সালের দ্বিতীয় গণআন্দোলনের পর নেপালে রাজতন্ত্র ও হিন্দু রাষ্ট্রের মর্যাদা বাতিল হয়। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে রাজতন্ত্রপন্থি শক্তিগুলো আবার সংগঠিত হওয়ার জোর চেষ্টা করছে।

চার বছর আগে দলের সাধারণ সম্মেলনে রাজেন্দ্র লিংদেনের প্যানেল চেয়ারম্যানসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে জয়ী হওয়ার পর কমল থাপা আরপিপি থেকে বেরিয়ে যান। সে সময় তিনি সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের বিরুদ্ধে দলীয় সম্মেলনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগও তুলেছিলেন। পরে তিনি আলাদা দল হিসেবে আরপিপি–নেপাল গঠন করেন।

আরও পড়ুন>>
শীতল নেপালের উত্তপ্ত রাজনীতি
নেপালে রাজনীতির সমীকরণ বদলে দিচ্ছে সরকার পতনের কান্ডারিরা
নেপালে জেন-জি বিক্ষোভে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর দলের বড় সমাবেশ
নেপালে জেন জি আন্দোলনের ৩ মাস পরেই সংস্কার রূপরেখা সই, কী আছে চুক্তিতে?

নেপালে আগামী ৫ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রতিনিধি পরিষদ নির্বাচন। তার আগে এই দুই দলের একীভূত হওয়ার উদ্যোগ নতুন করে গতি পেয়েছে। সেপ্টেম্বরের জেন জি অভ্যুত্থানের পর তৈরি হওয়া নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে জোট ও একীভবনের প্রবণতাও রাজতন্ত্রপন্থি দলগুলোকে কাছাকাছি আনতে ভূমিকা রেখেছে বলে জানিয়েছেন দলীয় নেতারা।

এর আগে, গত ২৮ মার্চ কাঠমান্ডুর তিনকুনেতে আয়োজিত এক রাজতন্ত্রপন্থি সমাবেশে দুই দল একসঙ্গে অংশ নেয়। পরে ২৮ মে থেকে আরপিপির নেতৃত্বে কাঠমান্ডুকেন্দ্রিক রাজতন্ত্র আন্দোলনেও থাপার নেতৃত্বাধীন দল অংশগ্রহণ করে।

মঙ্গলবার কাঠমান্ডুতে দল–সংযুক্ত জেন জি ফ্রন্টের এক জেলা সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে আরপিপি–নেপালের চেয়ারম্যান কমল থাপা সম্ভাব্য একীভবনের ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে কয়েক দিনের মধ্যেই সুখবর শুনতে পারবেন। সমমনা শক্তিগুলোর এক হওয়া এখন সময়ের দাবি।’

এর আগে, গত ২৭ নভেম্বর আরপিপি সমমনা দল ও গোষ্ঠীর সঙ্গে একীভবন ও সহযোগিতার সম্ভাবনা যাচাই করতে বুদ্ধিমান তামাং, বিক্রম পাণ্ডে ও ধ্রুব বাহাদুর প্রধানকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে। যদিও তখন দলটির নেতারা জানিয়েছিলেন, একীভবনের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব থাকলেও দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।

আরপিপি–নেপালের মুখপাত্র রাজারাম বার্তৌলা বলেন, জাতীয় রাজনীতির বাস্তবতায় এখন এক হওয়াই সময়ের দাবি। তার কথায়, ‘যে সময় আমরা আলাদা হয়েছিলাম আর যে সময় এখন এক হওয়ার কথা ভাবছি—দুটি পরিস্থিতি এক নয়। জেন জি অভ্যুত্থানের পর বদলে যাওয়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট উভয় পক্ষকেই ভাবতে বাধ্য করেছে।’

তিনি জানান, একীভবনের জন্য আরপিপি–নেপালের কোনো পূর্বশর্ত নেই এবং তারা আরপিপির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।

এদিকে বুধবার আরপিপির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শুরু হয়েছে। দলের মুখপাত্র ও লিংদেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোহন শ্রেষ্ঠ একীভবন নিয়ে আলোচনা হয়েছে স্বীকার করলেও বর্তমান বৈঠকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে বলে মনে করেন না। তার মতে, বিষয়টি দলীয় সংলাপ কমিটিই চূড়ান্ত করবে।

সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।