আজীবন থাকতে পারে করোনা, ব্রিটিশ বিজ্ঞানীর হুঁশিয়ারি
করোনাভাইরাস কোনো না কোনো আদলে আজীবন থাকতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ব্রিটিশ সরকারের জরুরি পরিস্থিতিতে বৈজ্ঞানিক পরামর্শ বিষয়ক কমিটির একজন সদস্য। স্যার মার্ক ওয়ালপোর্ট নামের ওই বিজ্ঞানী বলছেন, এমন ক্ষেত্রে নিয়মিত বিরতিতে মানুষজনের ভ্যাকসিন নেয়ার দরকার হতে পারে।
তার এই মন্তব্যের একদিন আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান মন্তব্য করেছিলেন যে, করোনাভাইরাস দুই বছরের মধ্যে বিদায় নেবে বলে তিনি আশা করছেন। কারণ স্প্যানিশ ফ্লুর বিদায় হতে দুই বছর লেগেছিল। স্যার মার্ক বলছেন, ঘন জনবসতি আর ভ্রমণের কারণে ভাইরাস খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বিবিসির এক রেডিও ফোরের টুডে অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘১৯১৮ সালে যতো জনসংখ্যা ছিল তার চেয়ে এখন বিশ্বের জনসংখ্যা অনেক বেশি। মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ‘গোটা বিশ্বের মানুষের জন্য ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু করোনাভাইরাস স্মল পক্সের মতো কোনো রোগ নয় যে, ভ্যাকসিন দিলেই তা চলে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা এমন একটা ভাইরাস যা কোনো না কোনো আদলে আজীবন আমাদের সঙ্গে থেকে যাবে। আর অনেকটা নিশ্চিত করে বলা যায় যে, মানুষজনকে বার বার ভ্যাকসিন নিতে হবে। সুতরাং ফ্লুর মতোই বিশ্বের মানুষজনকে নিয়মিত বিরতিতে নিতে হবে করোনার ভ্যাকসিন।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস এর আগে গতকাল বলেন, ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু দুই বছরের মধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তি এই ভাইরাসটিকে তার চেয়েও কম সময়ে আটকে দিতে পারবে বলে আশা করছেন তিনি।
১৯১৮ সালের ভয়াবহ ফ্লুতে বিশ্বে অন্তত পাঁচ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। করোনায় এখন পর্যন্ত বিশ্বের আট লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং দুই কোটি ৩০ লাখ মানুষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে ধারণা করা হয়, পরীক্ষা করা হয়নি বা লক্ষণ দেখা যায়নি, এমন আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
স্যার মার্ক সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, করোনাভাইরাস আবারও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া সম্ভব। সেটা ঠেকাতে শুধুমাত্র লকডাউনের পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিয়ে এগোতে হবে।
সম্প্রতি ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে ফের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে দেখা গেছে। যেসব দেশকে মহামারি এ ভাইরাসটির নিয়ন্ত্রণে সফল বলে মনে করা হচ্ছিল, সেসব দেশেও নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে।
স্যার মার্ক বলেছেন, ইউরোপীয় দেশগুলোতে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশে যেভাবে নতুন করে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে তিনি উদ্বিগ্ন। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত মোট ২ লাখ ৯২ হাজার ৬২৫ জন। এই সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩ হাজার ৯০৭ জন।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
এসএ/পিআর