হাইকোর্টের রুল

নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশিদের হস্তান্তরে স্বাধীন দরপত্র কেন নয়

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০৮ পিএম, ৩০ জুলাই ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় বিদেশিদের কাছে হস্তান্তরে স্বাধীন দরপত্র কেন আহ্বান করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার (৩০ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও আইনজীবী মো. আনোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম, মাহফুজ বিন ইউসুফ ও মো. আসাদ উদ্দিন।

এর আগে, নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনার ক্ষেত্রে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বানের নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন।

রিটে দেশীয় অপারেটরদের অনুমতি না দিয়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) আইন ও নীতি লঙ্ঘন করে নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।

যে কোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার জন্য দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়।

রিটে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে রিটটি শুনানির জন্য গত ২৫ মে আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অবকাশের পর শুনানির জন্য রাখেন। গত ৩ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটি চলে।

রিট আবেদনকারী আইনজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, অবকাশকালীন ছুটির পর ২৩ জুন রিটটি আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। এরপর ২৫ জুন বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে আদালত শুনানির জন্য ২৯ জুন সময় নির্ধারণ করেন এবং নির্ধারিত দিনেই শুনানি হয়।

নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনের সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন ওই রিটটি করেন। ‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’- এ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদনটি করা হয়।

রিটকারী পক্ষের আইনজীবী জানান, ২০১৯ সালে সমঝোতা স্মারকের মধ্য দিয়ে প্রক্রিয়াটি শুরু হয়। টার্মিনাল অপারেটর সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। জি-টু-জি ভিত্তিতে প্রকল্পের কাজ পেতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে দুই হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করতে হয়। অথচ পিপিপি কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে দেওয়া প্রজেক্ট প্রোফাইলে অনুমিত বিনিয়োগ হিসেবে ২০০ কোটি টাকা দেখা যায়, যা জি-টু-জি গাইডলাইন-২০১৭ সংশ্লিষ্ট বিধির পরিপন্থি।

এফএইচ/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।