মিস ইউনিভার্স ফাতিমা ছোট থেকে যে রোগে আক্রান্ত

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:০০ পিএম, ২১ নভেম্বর ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত

এবারের মিস ইউনিভার্সের খেতাব জিতেছেন মেক্সিকোর ২৫ বছর বয়সী মডেল ফাতিমা বশ। ছোটবেলা থেকেই তিনি ডিসলেক্সিয়া (পড়া ও লেখায় অসুবিধা, উচ্চারণে সমস্যা) এবং অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার (এডিএইচডি)-তে ভুগেছেন, যার কারণে স্কুল ও কলেজে বুলিংয়ের শিকারও হতে হয়েছেন।

তবে ফাতিমা এই সীমাবদ্ধতাগুলোকে কখনো বাধা হিসেবে দেখেননি; বরং পরবর্তী সময়ে তা নিজের শক্তি ও অনুপ্রেরণার উৎসতে পরিণত করেছেন। তার জীবন সংগ্রামের গল্প সত্যিই প্রেরণাদায়ক, কারণ তিনি সব চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন। এছাড়া ভারতীয় তারকা আলিয়া ভাট এডিডি) ভুগছেন।

এডিএইচডি কী?
এডিএইচডি হলো স্নায়ু ও মস্তিষ্কের জটিল সমস্যা বা রোগ। আমাদের মস্তিষ্ক এবং শরীরের স্নায়ুর মাধ্যমে বুদ্ধি, বিকাশ, মনন, আচরণ-সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ হয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এসব স্নায়ু ও মস্তিষ্কের কার্যক্রমে পরিবর্তন আসে। কিন্তু যদি এই পরিবর্তন ঠিকভাবে না ঘটে, তাহলে শারীরিক ও মানসিক নানা লক্ষণ দেখা দিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ মনোযোগ কমে যাওয়া, চিন্তাশক্তি ও স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, মনঃসংযোগ ধরে রাখতে না পারা, অতিরিক্ত তৎপরতা এবং সময়ে সময়ে আগ্রাসী মনোভাব।

মিস ইউনিভার্স ফাতিমা ছোট থেকে যে রোগে আক্রান্ত

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই সব লক্ষণকে একত্রিত করে বলা হয় অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার বা এডিএইচডি। এটি শিশু ও অল্প বয়সীদের মধ্যে দেখা যায়, তবে প্রাপ্তবয়স্কর মধ্যেও থাকতে পারে।

এ রোগের লক্ষণ
যখন শিশুদের মধ্যে চঞ্চলতার চেয়ে মনোযোগহীনতার তীব্রতা বেশি থাকে, তখন তারা স্কুলের ব্যাগ গোছানো থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজগুলো গুছিয়ে রাখতে অনেক অসুবিধা অনুভব করে। সাধারণত এডিএইচডি শৈশবেই শনাক্ত করা যায়, এবং মা-বাবা বা স্কুলের শিক্ষক প্রাথমিকভাবে এই সমস্যাগুলো খুঁজে বের করতে পারেন। সমস্যাগ্রস্ত শিশুদের কোনো কিছুর প্রতি দীর্ঘ সময় মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়। তারা সারাক্ষণ ছোটাছুটি করে, চিন্তাভাবনা না করে হঠাৎ কিছু করে, স্থিরভাবে বসে থাকতে পারে না, বই-কলম প্রায়ই হারিয়ে ফেলে, লাফিয়ে ওঠে, প্রশ্ন শোনার আগেই উত্তর দেয় এবং পড়াশোনা বা খেলাধুলাতেও মনোযোগ রাখতে সমস্যা হয়।

যা করবেন
যদি কারো মধ্যে মনোযোগহীনতার লক্ষণ দেখা দেয়, তবে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া উচিত। নিজের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ ও নিয়ন্ত্রিত করার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো, ঠিক সময়ে খাবার খাওয়া এবং খেলার সময় খেলা করার একটি নিয়মিত রুটিন তৈরি করা প্রয়োজন। পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় কৃত্রিম রং এবং অতিরিক্ত মিষ্টি কমিয়ে তাজা ফলমূল অন্তর্ভুক্ত করলে মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়ক হতে পারে।

মিস ইউনিভার্স ফাতিমা ছোট থেকে যে রোগে আক্রান্ত

ডিসলেক্সিয়া কী
ডিসলেক্সিয়া হলো স্নায়ুর বিকাশজনিত একটি সমস্যা, যা অনেকেই ভুলবশত বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতার সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেন। এটি একটি ‘লার্নিং ডিসঅ্যাবিলিটি’ বা শেখার অসুবিধা, যেখানে বুদ্ধিমত্তা সাধারণত বয়স অনুযায়ী স্বাভাবিক থাকে। বুদ্ধিমত্তা স্বাভাবিক থাকলেও এই শিশুদের প্রাথমিকভাবে শুদ্ধভাবে পড়া এবং সঠিক বানান করা কঠিন হয়ে পড়ে।

আমাদের মস্তিষ্কের সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের পেছনের অংশ সাধারণত বানান এবং পড়ার নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু ডিসলেক্সিকদের ক্ষেত্রে এই অংশ স্বাভাবিকের চেয়ে কম কার্যকর থাকে, মস্তিষ্কের সামনের অংশ বেশি কাজ করে।

ডিসলেক্সিয়া অনেক সময় বংশগতও হতে পারে। তবে কোনো একক জিন একা এই সমস্যার জন্য দায়ী নয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ২৩ থেকে ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ডিসলেক্সিক শিশুদের মা-বাবা বা পরিবারের অন্য কোনো সদস্যেরও ডিসলেক্সিয়া থাকতে পারে।

সূত্র: হেলথলাইন, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

আরও পড়ুন:
কালো ব্লেজার-ফ্লেয়ার্ড ট্রাউজারে সুস্মিতার রাজকীয় উপস্থিতি
স্বপ্নে প্রিয়জন হারাতে দেখা যেভাবে কমানো যায়

এসএকেওয়াই/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।