যানজটে স্থবির রাজধানী, পথেই ইফতার

ঘড়ির কাঁটা তখন ৫টা বেজে ৩০ মিনিট। তিনতলা বিশিষ্ট মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার তখনও যানজটে স্থবির। ঠাঁয় দাঁড়িয়ে যানবাহন। শান্তিনগর মোড় থেকে ফ্লাইওভারে উঠেই দাঁড়িয়ে যেতে হচ্ছে গাড়িগুলোকে। জ্যামে কেটে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ফ্লাইওভারের জটলা নিরসনে কিছুক্ষণ পর আসে ট্রাফিক পুলিশ। তারপরও জটলা থেকে মুক্তি মেলে না। এ অবস্থায় পরিবারের সঙ্গে ইফতার করতে পারেন না অনেকে। পথেই ইফতার সেরে নিতে হয় ঘুরমুখো যাত্রীদের।
সোমবার (২৭ মার্চ) ওই এলাকায় এমন চিত্র দেখা যায়।
মিরপুরগামী যাত্রী আনারুল হক। মতিঝিল থেকে রওয়ানা দিয়ে এক ঘণ্টায় মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারে পৌঁছান। এরপর ৪৫ মিনিট একই স্থানে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাদের বহনকারী বাসটিকে।
আরও পড়ুন>> শেষ বিকেলে তীব্র যানজটে নাকাল নগরবাসী
আনারুল হক বলেন, ‘পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ইফতার করার ইচ্ছায় আড়াই ঘণ্টা হাতে নিয়ে মতিঝিল থেকে মিরপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছি। প্রায় দুই ঘণ্টা চলে গেছে মতিঝিল থেকে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার পার হতে পারলাম না। মনে হয় আজ পরিবারের সঙ্গে ইফতার করতে পারবো না।’
টানা তিনদিন বন্ধ থাকায় ফুরফুরে মেজাজে ছিল ঢাকার রাজপথ। তবে রমজানের প্রথম কর্মদিবস সোমবার ফিরে এসেছে যানজটের সেই পুরোনো চেহারা। এদিন যানজটে স্থবির হয়ে পড়ে পুরো রাজধানী। যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় রাস্তায়। সকালে অফিসমুখো মানুষের চাপে নগরীতে যানজট বেড়ে যায়।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরে যানজটের মাত্রাও বেড়েছে। বিকেলে অফিস শেষ করার পর চরম আকার ধারণ করে যানজট। মূল সড়ক থেকে অলি-গলি পর্যন্ত ছিল যানবাহনের চাপ। অফিস শেষে ঘরমুখো মানুষের চাপে পুরো নগরীতে নেমে আসে স্থবিরতা। ঢাকায় এমন কোনো সড়ক বা অলিগলি খুঁজে পাওয়া মুশকিল যেখানে যানজট ছিল না।
অন্য সড়কের মতো আগারগাঁও থেকে মহাখালী রেলগেট পর্যন্ত গাড়ির বেশ চাপ লক্ষ করা যায়। ১০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে লেগে যায় এক ঘণ্টার বেশি সময়। মহাখালী থেকে গুলশান-বনানী সড়কেও জটলা ছিল।
আরও পড়ুন>> হার্ট অ্যাটাক-স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে যানজটে গাড়ির শব্দ
এছাড়াও যানবাহনের চাপে স্থবির ছিল আগারগাঁও থেকে মিরপুর-১০ নম্বর সড়ক। আগারগাঁওয়ে তালতলায় দেখা যায়, সময় না থাকায় রাস্তার পাশেই একসঙ্গে পাঁচজন ইফতার শুরু করেন। এরপর ধীরে ধীরে আরও অনেকে শামিল হন তাদের সঙ্গে।
তাদের মধ্যে ইমতিয়াজ করিম গুলশান-১ নম্বরে একটি ওষুধের দোকানি। বাসা মিরপুর বর্ধিত পল্লবী। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ইচ্ছা ছিল পরিবারের সঙ্গে ইফতার করবো। সেজন্য দেড় ঘণ্টা হাতে নিয়ে বের হয়েছি, কিন্তু এমন যানজট হবে কল্পনাও করিনি। চারদিকে সবকিছু থেমে আছে, তাই বাধ্য হয়ে পথে অন্যের ইফতারিতে ভাগ বসালাম।
এমওএস/ইএ/এএসএম