ছাদ বাগানে রঙিন ড্রাগনের জাদু
লাল, সবুজ, হলুদ…। ড্রাগন ফলের এমন রঙিন বাহার যেন চোখকে আচ্ছন্ন করে। শরীয়তপুরের জাজিরায় এক তরুণের ছাদবাগানে গিয়েই মনে হতে পারে, আপনি বুঝি কোনো ফলের রাজ্যে ঢুকে পড়েছেন। ছবি: বিধান মজুমদার
-
বাড়ির ছাদে গাছ লাগিয়েই বাজিমাত করেছেন ২৬ বছর বয়সী হিমেল মোল্লা।
-
ছোট্ট এই ছাদবাগানে এখন শোভা পাচ্ছে ৬০ প্রজাতির ড্রাগন ফল গাছ, যার ৩০টির বেশি থেকে এরইমধ্যে ফল আসছে।
-
পাশাপাশি চাষ করছেন পাহাড়ি ফল ‘প্যাশন’, মালবেরি আর আঙুরের মতো নানা ফলজ গাছ।
-
ছোটবেলা থেকেই গাছে মুগ্ধ ছিলেন হিমেল। করোনা পরিস্থিতি যখন সবাইকে ঘরবন্দি করেছিল, ঠিক তখনই তিনি হাতে নেন গাছের চারা। জায়গার সংকটে ছাদকেই বানিয়ে ফেলেন সবুজ রাজ্য।
-
প্রথমদিকে বাবা রাজি ছিলেন না। ‘ছাদ নষ্ট হবে’-এই ছিল আপত্তি। কিন্তু হিমেলের আগ্রহে হার মানেন তিনিও। এখন ছেলের সাফল্যে গর্বে বুক ফুলে ওঠে বাবা হায়দার মোল্লার।
-
বিগ পিংক, ব্রুনি বারি-১, পার্পেল হার্জ, থাই রেড, কনি মায়ের, রেড ভেলভেট, অজি গোল্ড-এমন বাহারি নামের ড্রাগন ফল এখন হিমেলের বাগানের অহংকার। ফলের স্বাদেও রয়েছে বৈচিত্র্য কোনোটা মিষ্টি, কোনোটা টক-মিষ্টি, আবার কোনোটা এতটাই রসালো যে মুখেই গলে যায়!
-
বাজারে অর্গানিক ড্রাগনের তুমুল চাহিদা। প্রতি কেজি ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয় হিমেলের ফল। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম! গাছের কাটিং বিক্রিতেও আয় হয় ভালো। সব মিলিয়ে মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা রোজগার করেন তিনি।
-
আরও বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখেন হিমেল। বলেন, ‘সরকারি সহযোগিতা পেলে আরও বড় পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন আর প্যাশন চাষ করতে চাই।’
-
তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে হিমেল এখন অনেকের অনুপ্রেরণা। তার ছাদবাগান দেখে প্রতিবেশী তরুণরাও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন সবুজের পথে হাঁটতে।
-
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজুর রহমান বলেন, ‘এই তরুণের কাজ প্রশংসনীয়। বাণিজ্যিক উদ্যোগে পাশে থাকবে কৃষি বিভাগ।’
-
ছাদ বাগান মানে শুধু সবুজ নয়, হতে পারে সম্ভাবনার বিশাল দিগন্ত, হিমেল মোল্লা যেন সেই কথাই প্রমাণ করে চলেছেন।