তিন ম্যাচ খেলতে না পারার জেদ মিটিয়েছেন সাগরিকা
নেপালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে লাল কার্ড পাওয়ার পর নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ৩ ম্যাচ। সাথে ৫০০ ডলার আর্থিক জরিমানা হয়েছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী দলের স্ট্রাইকার মোসাম্মাৎ সাগরিকার। ভুটানের বিপক্ষে দুই ও শ্রীলংকার বিপক্ষে এক ম্যাচ খেলতে না পারা সাগরিকা কয়েকদিন ছিলেন চুপচাপ। তিনি জানতেন শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনে তিনি খেলবেন। সতীর্থরা যখন পর পর তিনটি ম্যাচ খেলছিলেন তখন তিনি একাকি এক পাশে মনমরা হয়ে বসে থেকেছেন। আর মনে মনে হয়তো প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তিন ম্যাচ না খেলার শোধ নেবেন শেষ দিনে।
যেই কথা সেই কাজ। শেষ দিনে সাগরিকা এমন প্রতিশোধ নিলেন, যা নেপালের গায়ে দগদগে ঘা তৈরি করেছে। বাংলাদেশের ৪-০ ব্যবধানের জয়ে সবগুলো গোলই করেছেন সাগরিকা।
সোমবার নেপালকে হারিয়ে শিরোপা নিশ্চিতের পর বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনার গ্যালারিতে সাগরিকা-সাগরিকা বলে আওয়াজ ওঠে। সাগরিকা তখন মাঠের মাঝে দাঁড়িয়েছিলেন। গ্যালারি থেকে তাকে অনুরোধ করা হচ্ছিল যেন দর্শকদের কাছে যান এবং তাদের সঙ্গে উদযাপনে যোগ দেন। দর্শক-ভক্তদের অনুরোধে গ্যালারির পাশে গিয়ে তিনি তাদের সাথে উদযাপন ভাগাভাগি করেছেন। দর্শকদের বেশ কয়েকজনের সেলফির আবদারও মিটিয়েছেন সাগরিকা।
তিন ম্যাচে ৮ গোল করা সাগরিকা আর অধিনায়ক আফঈদাকে নিয়ে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন এই সাফল্যের মাস্টারমাইন্ড কোচ পিটার বাটলার। এমন একটি সাফল্যের পর সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক থাকবেন সেটা স্বাভাবিক। সাগরিকা না থাকলে কি হয়? তাই তো কোচ তাকে নিয়ে এসেছিলেন। সাগরিকাই যে এ ম্যাচের সব আলো কেড়ে নিয়েছিলেন।
ম্যাচের পর স্বাভাবিকভাবেই তার কাছে গণমাধ্যমের প্রশ্ন ছিল তিন ম্যাচ খেলতে না পারায় কেমন বোধ করেছিলেন। তখনই সাগরিকা বলে দিলেন জেদের কথ। প্রতিক্রিয়ায় প্রথমেই সাগরিকা বলেন, ' বলার অপেক্ষা রাখে না যে অনেক ভালো লাগছে। আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। তিন ম্যাচ খেলতে পারিনি। অনেক কষ্ট লাগছিল। মনে মধ্যে জেদ কাজ করেছিল। নেপালের বিপক্ষে ভালো কিছু করবো, ভালো কিছু করতেই হবে-এমন জেদ ছিল আমার। পেরেছিও। আমি সেরা খেলোয়াড় হয়েছি। এটা আরো ভালো লাগার। তবে অবশ্যই বেশি ভালো লাগছে চ্যাম্পিয়ন হতে পেরে।'
লাল কার্ড দেখে শাস্তি পাওয়ায় কিছুটা বোধদয় হওয়ার কথাও বলেছেন সাগরিকা 'ভবিষ্যতে আমাকে মাথা ঠান্ডা রেখে খেলতে হবে। লালকার্ড মাঠের বাইরে আসার পর মনে হয়েছে এভাবে মাথা গরম করা যাবে না। যেটা আমার জন্য একটা শিক্ষাও।’
আরআই/এমআরএম/এএমএ