‘কোয়াব নারায়ণগঞ্জ’ হতে পারে দেশের ক্রিকেট উন্নয়নে বড় উদাহরণ

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৪:২৯ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

‘কোয়াব’ বাংলাদেশ ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন, শুধু দেশের ক্রিকেটারদের মঙ্গল, কল্যাণের জন্যই এ সংগঠন নয়। ক্রিকেটরদের পাশাপাপশি দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নেও যে এ সংগঠন কার্যকর অবদান রাখতে পারে, তা এবার জানা গেলো। বোঝা গেলো, কোয়াবও পারে দেশের ক্রিকেটে নতুন প্রজন্ম তৈরি করতে।

কোয়াবের উদ্যোগেও নতুন নতুন প্রতিভার উন্মেষ ঘটানো সম্ভব। কোয়াবও প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট আসরের সফল আয়োজক হতে পারে। সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখাই এর সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ। এক সফল ক্রিকেট আসর আয়োজন করে সে সত্যই জানিয়ে দিলো তারা।

 নারায়ণগঞ্জ ক্রিকেটের তিন স্বপ্নসারথী, এক সময়ের নামী, জনপ্রিয় ও দেশ বরেণ্য তিন ক্রিকেটার জাকারিয়া ইমতিয়াজ, শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ ও জাহাঙ্গীর আলমরা মিলে ক্রিকেট একাডেমি চালান। স্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের সহায়তা করেন। নারায়নগঞ্জ ‘লায়ন্স’ ক্লাবের মত প্রতিষ্ঠানও তাদের এ পথ চলার সাথী।

জাকারিয়া আর বিদ্যুতরা নারায়ণগঞ্জের ক্রিকেট উন্নয়নে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সমন্বয় ঘটিয়েছেন। এই জেলার সাবেক নামী, সফল ক্রীড়া সংগঠক প্রয়াত কুতুবউদ্দীন আকসির-এর নামে একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করে বিদ্যুত ও জাকারিয়ারা দেখিয়ে দিলেন ক্রিকেটাররা শুধু খেলেই না, খেলা ছাড়ার পর কোচিংই তাদের একমাত্র কাজ নয়। তারা ক্রিকেট ব্যবস্থাপনায়ও দক্ষ।

তাদের উদ্যোগে ও হাত ধরে, তাদের ব্যবস্থাপনায় জেলায় জেলায় ক্রিকেট একাডেমি গড়ে তোলার পাশাপাশি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজনও সম্ভব। সবার প্রিয় ক্রিকেট ও শ্যুটিং সংগঠক ক্রীড়াপ্রেমী, ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ প্রয়াত আকসির ভাইয়ের স্মৃতিতে ‘কে ইউ আকসির মেমোরিয়াল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট’ আয়োজন করে নারায়নগঞ্জ কোয়াব তাদের সাংগঠনিক দক্ষতার নিপুন ছাপ রাখলো।

Babu Vai

নারায়নগঞ্জের বেশ কিছু যুবা ও তরুণ এখনো ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে নিয়মিত অংশ নেন। তাদের বাইরে যারা জুনিয়র লেভেলে খেলছেন, সে সব তরুণদের নিয়ে আয়োজিত ওই ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে বিশেষ অতিথি হিসেবে যাওর সুযোগ হয়েছিল এই রিপোর্টারের (জগোনিউজের বিশেষ সংবাদদাতা ও বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরিফুর রহমান বাবু)। প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় দলের হয়ে তিন ফরম্যাট খেলা ও বর্তমান কোয়াব সভাপতি মোহাম্মদ মিঠুন।

দেশের ক্রিকেটের অনেক বড় নাম, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক দেশ বরেণ্য ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব রকিবুল হাসান ছিলেন সম্মানিত অতিথি। এছাড়া আকসির ভাইয়ের স্ত্রীও ছিলেন বিশেষ অতিথি। দেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ ও জনপ্রিয় ক্রিকেট লেখক, সাংবাদিক ও ক্রিকইনফো ইএসপিনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইসাম মোহাম্মদ ছিলেন বিশেষ অতিথি। অতিথিদের বিশেষ ক্রেস্ট উপহার দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়।

কোয়াবের সহ-সভাপতি শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুতের অভ্যর্থনা ও আন্তরিকতা, জাকারিয়ার ব্যবস্থাপনা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় পুলকিত, মুগ্ধতা ছড়ালো। সাথে আরেকজনের কথা না বললেই নয়। তিনি নারায়নগঞ্জের আরেক ক্রিকেট তারকা সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার জাহাঙ্গীর আলম, খেলোয়াড়ী জীবনে যাকে ঢাকার দর্শকরা ভালবেসে ‘টাইগার’ নামে ডাকতেন। জাহাঙ্গীর ও তার ছেলে দেশের ক্রিকেটের আগামী দিনের সম্ভাবনা জিসান আলমকেও পাওয়া গেল মাঠে।
জাহাঙ্গীর আলমের ছোট ভাই সাবেক ক্রিকেটার জুয়েল হোসেন মনা, নারায়নগঞ্জের খেলাধুলার পুরনো ও শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের পরিচিত মুখ ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ তানভিরসহ উপস্থিত ক্রিকেটার, সংগঠক, পৃষ্ঠপোষকদের আন্তরিক উপস্থিতিতে ১২ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে নারায়নগঞ্জ স্পোর্টস কমপ্লেক্সের পরিবেশটা ছিল মনোরম। একদম ক্রিকেট উপযোগী।

দেশের ক্রিকেট অগ্রযাত্রায় কোয়াব নারায়নগঞ্জ এক উদাহরণ হতে পারে। তাদের দেখাদেখি কোয়াবের অন্য জেলাও যদি এমন উদ্যোগ আর আয়োজন করে, তাহলে অবশ্যই দেশের ক্রিকেটের উন্নতি ও অগ্রগতি বেড়ে যাবে। প্রতিটি জেলার কোয়াব কর্মকর্তা আর সদস্যরা যদি জাকারিয়া, জাহাঙ্গীর ও বিদ্যুতের মত উদ্যোগী হয়ে নিজ নিজ জেলায় ক্রিকেট কোচিং একাডেমি নির্মানের পাশাপাশি নিয়মিত ক্রিকেট আসরের আয়োজন করতেন, তাহলে তরুণরা মাঠে খেলে খেলে নিজেদের প্রতিভার স্ফুরণ ঘটানোর সুযোগ পেতেন। নতুন নতুন প্রতিভার উন্মেষ ঘটতো। দেশের ক্রিকেটই উপৃকত হতো।

এআরবি/আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।