নিষেধাজ্ঞা ও জরিমানার ভয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলে হারলো ভারত

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:০৮ পিএম, ১০ মে ২০২৫

দু’দেশের মধ্যে চলছে চরম সামরিক উত্তেজনা। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলছে পাল্টাপাল্টি মিসাইল ও ড্রোন হামলা। চলমান এই উত্তেজনার মধ্যে স্থগিত হয়ে গেছে দুই দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আইপিএল ও পিএসএল। এর মধ্যেই পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো খেলায় অংশগ্রহণ করার অঙ্গীকারও হয়তো করে ফেলেছে ভারত।

কিন্তু ক্রমবর্ধমান এই উত্তেজনার মধ্যেও পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি ম্যাচ খেলেছে ভারত। গতকাল শুক্রবার ওমানের রাজধানী মাস্কটে এশিয়ান বিচ হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশিপে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল।

ম্যাচটি এমন দিনে আয়োজিত হয়, যার আগের দিন (বৃহস্পতিবার) দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা ঘটে। ওইদিন পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড নিজ নিজ ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের ম্যাচ স্থগিত করেছিল।

ভক্তদের মনে প্রশ্ন, চরম উত্তেজনাকর এই পরিস্থিতিতেও কেন পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেললো ভারত?

বাস্তব ঘটনা হলো- ভারত আসলে ম্যাচটি খেলতে চায়নি। পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদেরকে খেলতে বাধ্য করেছিল মূলত এশিয়ান হ্যান্ডবল ফেডারেশন (এএইচএফ)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যদি না খেলে তাহলে টুনামেন্ট থেকে ভারতকে নিষিদ্ধ এবং বড় অংকের অর্থ জরিমানা করা হবে।

এসব খবর নিজস্ব সূত্রের বরাতে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।

টাইমস অব ইন্ডিয়াকে ভারতীয় হ্যান্ডবল ফেডারেশনের (এইচএফআই) নির্বাহী পরিচালক আনন্দেশ্বর পাণ্ডে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক হ্যান্ডবল ফেডারেশনের (আইএইচএফ) সনদের অনুযায়ী, যদি আমরা ম্যাচ বয়কট করতাম, তবে আমাদের ১০,০০০ মার্কিন ডলার জরিমানা দিতে হতো। পাশাপাশি আমাদের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখিও হতে হতো। এএইচএফ (এশিয়ান হ্যান্ডবল ফেডারেশন) স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিল যে, যদি ভারতীয় দল ম্যাচে উপস্থিত না হলে তা অলিম্পিক সনদের চুক্তি ভঙ্গ বলে গণ্য করা হবে। আমাদের আর কোনো উপায় ছিল না।’

উপায়ন্তর না দেখে পাকিস্তানের বিরোধিতা বোঝাতে কালো আর্মব্যান্ড পরে খেলতে নামেন ভারতীয় দলের খেলোয়াড়রা। কিন্তু আয়োজকরা সেখানেও তাদের বাধা দেন। বলে দেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডও টুর্নামেন্ট থেকে নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার কারণ হতে পারে।

একে বাধ্য হয়ে খেলেছে, তার ওপর ম্যাচের ফলাফলও ভারতের জন্য সুখকর ছিল না। সুলতান কাবুস স্পোর্টস কমপ্লেক্সে পাকিস্তানের কাছে ২-০ ব্যবধানে হেরে গেছে ভারত।

পাণ্ডে বলেন, ‘ম্যাচ শুরুর আগে হ্যান্ডবল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া আলাদাভাবে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (আইওএ) কে চিঠি পাঠিয়ে তাদের দিকনির্দেশনা চেয়েছিলাম, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলতে হবে কি না জানার জন্য। তারা ইমেইলের তাত্ক্ষণিক কোনো জবাব দেয়নি এবং ততক্ষণে ম্যাচ শুরু হয়ে গিয়েছিল। সরকার পক্ষ থেকে এমন কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা নেই, যা ভারতীয় দলকে পাকিস্তানের সঙ্গে খেলার ক্ষেত্রে নিষেধ করে। যদি তেমন কোনো নির্দেশনা থাকত, তাহলে আমরা প্রতিযোগিতা থেকে দলকে প্রত্যাহার করে নিতাম।’

‘এই প্রতিযোগিতায় আবারও দুই দলের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেমিফাইনাল বা ফাইনাল পর্বে। আমরা মন্ত্রণালয় ও আইওএ এর নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। যদি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তা না আসে, তাহলে আমরা আমাদের দলকে পরবর্তী পাকিস্তান ম্যাচ (যদি হয়) বয়কট করতে বলবো’-যোগ করেন পাণ্ডে।

এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল আগামী ১৫ মে। প্রতিযোগিতাটি ২০২৬ সালের বিচ হ্যান্ডবল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ালিফায়ার হিসেবে বিবেচিত হবে।

এমএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।