`বোলার সাকিবের জ্বলে ওঠাও দেখতে চাই`
মেহরাব হোসেন অপি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অবিচ্ছিন্ন নাম। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপের আগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০১ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন অপি।
কাকতালীয়ভাবে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম হাফ সেঞ্চুরিয়ানও তারই পরিবারের একজন। অপির চাচা আজহার হোসেন সান্টু এ কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন তারও ৯ বছর আগে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল নিয়ে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান অপির সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জাগো নিউজের বিশেষ সংবাদদাতা রফিকুল ইসলামকে।
জাগো নিউজ : শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল খেলতে নামছে বাংলাদেশ। গোটা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে এ ম্যাচের দিকে। ম্যাচটি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কী?
অপি : বাংলাদেশ যোগ্যতা দিয়েই সেমিফাইনালে উঠেছে। আমি তো চাইব বাংলাদেশ জিতুক। তারপরও আমার কাছে মনে হয় জেতাটা সহজ হবে না।
জাগো নিউজ : জেতাটা সহজ হবে না কেন মনে করছেন? ভারতকে তো আগেও হারিয়েছে বাংলাদেশ, তাই না?
অপি : আসলে ভারতের মতো শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে জিততে হলে অবশ্যই শক্তিশালী বোলিং লাইনআপ থাকা দরকার। এ মুহূর্তে যেটা আমাদের নেই।
জাগো নিউজ : যদি বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনের দিকে তাকাই, তাহলে কী মনে হয়?
অপি :এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমাদের ব্যাটিং লাইনআপ যেটা আছে তা যথেষ্ট শক্তিশালী। যেকোনো দলের বিপক্ষেই ৩০০ রান করার মতো ক্ষমতা আছে এ দলটির। বড় কথা হলো, বিপরীতে আমাদের যে বোলিং তা দিয়ে ভারতের ব্যাটিংয়ে ধ্স নামানো কঠিন। আমার মনে হয় না আমাদের বোলিং এ অবস্থায় আছে।
জাগো নিউজ : তাহলে ম্যাচের আগে আপনি কী ভারতকে একটু এগিয়ে রাখবেন?
অপি : হ্যাঁ। কারণটা ওদের ব্যাটিং আর আমাদের বোলিং। সেদিক দিয়ে আমরা ম্যাচে অনেকটা পিছিয়ে থাকব। তারপরও আশা করি বাংলাদেশ ভালো একটা ম্যাচ উপহার দেবে।
জাগো নিউজ : আমাদের স্পিনারদের নিয়ে কতটা আশাবাদী আপনি?
অপি : মনে হয় না যে, স্পিন দিয়ে ভারতের ব্যাটসম্যানদের আটকানো সম্ভব। কারণ ভারতের এমন একটা ব্যাটিং লাইনআপ যে, তারা পেস ও স্পিন দুটোতেই পারদর্শী। তাদের দলে একাধিক খেলোয়াড় আছেন যারা একাই ম্যাচের গতি পাল্টে দিতে পারে, মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। তাছাড়া উপমহাদেশে স্পিন সবচেয়ে ভালো খেলে ভারত।
জাগো নিউজ : তার মানে আপনি বাংলাদেশের বোলিংটা নিয়েই বেশি চিন্তিত?
অপি : দেখুন বাংলাদেশের এ বোলিং লাইনআপটা অনেক ধারালো হয়ে উঠবে যদি সাকিব বোলার হিসেবেও জ্বলে ওঠে। আমাদের বোলিং লাইনআপে সাকিব আছে, যে ম্যাচের গতি-চিত্র বদলে দিতে পারে; কিন্ত অনেক দিন ধরে সাকিবকে আমরা বল হাতে সেভাবে দেখতে পাচ্ছি না। যদিও ব্যাট হাতে সেদিন চমৎকার ইনিংস খেলেছে। আশা করব এ ম্যাচে বোলিংয়েও ভালোভাবে ফিরে আসবে সাকিব। বোলার সাকিবের জ্বলে ওঠাও দেখতে চাই। সে বল হাতে জ্বলে উঠলে ম্যাচের যেকোনো ফলই হতে পারে।

জাগো নিউজ : ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ। অনেকেই মনে করেন এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য বাড়তি অনুপ্রেরণা। আপনি কী মনে করেন?
অপি : ভারতের বিপক্ষে খেলা, আমাদের খেলোয়াড়রা বাড়তি অনুপ্রেরণা পাবে আশা করি। কারণ ঘরের মাঠে তাদের বিপক্ষে সিরিজ জয় করেছি। বিশ্বকাপেও ভালো একটা ম্যাচ উপহার দিয়েছিলাম। এসব স্মৃতি তো আছেই। ভারত কিন্তু বাংলাদেশের এ দলটিকে যথেষ্ট সমীহ করে খেলে।
জাগো নিউজ : ২০০৫ সালে কার্ডিফে আশরাফুল সেঞ্চুরি করে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। এবার সাকিব আর রিয়াদ সেঞ্চুরি করে ম্যাচ জিতিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। আপনি কোন সেঞ্চুরিকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন?
অপি : প্রতিটি সেঞ্চুরিই কিন্তু ব্যাটসম্যানের বিরাট অর্জন। তারা অনেক কষ্ট করে ১০০ রানে পৌঁছায়। আশরাফুলের সেঞ্চুরিটা ওই সময়ের জন্য সেরা ইনিংস ছিল। যদি কম্পিটিশন দেখেন তাহলে আবার ভিন্ন কথা। সাকিব আর রিয়াদ কিন্তু করেছেন আইসিসির বড় একটা টুর্নামেন্টে। আশরাফুলের সেঞ্চুরিটা ছিল একটা সিরিজে। তারপরও সেঞ্চুরি, সেঞ্চুরিই।
আরআই/আইএইচএস/