ঢাবির হলে শিবির নেতা নির্যাতন

প্রভোস্ট-প্রক্টরসহ ছাত্রলীগের ২৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৯:১৫ পিএম, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আরবি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও শিবির নেতা মো. নাজমুল বাশারকে ২০১৭ সালে রাতভর নির্যাতন করে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেই ঘটনার প্রায় ৮ বছর পর ৫ ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় তৎকালীন হল প্রভোস্ট-প্রক্টরসহ ঘটনায় জড়িত ২৬ জন সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নাজমুল বাশার।

মামলার এজাহারে নাজমুল বাশার উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালের ৯ জানুয়ারি ছাত্রলীগের তৎকালীন হল শাখা সভাপতি বরিকুল ইসলাম বাঁধনের নেতৃত্বে কয়েক দফা বঙ্গবন্ধু হলের ২২২ নম্বর রুমে ও ৩১৭ নম্বর রুমে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের সময় দুই হাত বেঁধে ও চোখ বেঁধে কিল-ঘুসি মারাসহ রড স্টাম্প দিয়ে পেটানো হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও হাতের নখ উপড়ে ফেলার জন্য প্লাস দিয়ে নখ টানা হয় ও হাতে প্লাস দিয়ে বাড়ি দিয়ে হাত থেতলে দেওয়া হয় এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

মামলার এজাহারে নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, আমার দেহ নিস্তেজ হয়ে পরলে আসামিরা আমাকে মৃত মনে করে আনুমানিক রাত ১২.৩০ মিনিটে আমাকে হলের গেটে ফেলে রাখে। আমাকে হলের মধ্যে নির্যাতনের বিষয়ে হলের তৎকালীন প্রভোস্ট মফিজুর রহমান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর এ এম আমজাদ অবগত থাকলেও আমাকে আসামিদের নির্যাতন থেকে বাঁচানোর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। বরং আসামিদের নির্বিঘ্নে নির্যাতন করতে প্রশাসনিক সহায়তা দিয়েছেন, উসকানি দিয়েছেন এবং হল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসামিদের নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছেন। আসামিদের বর্বর নির্যাতনে আমার বাম হাত ও বাম পা ভেঙে যায় এবং শরীরে অসংখ্য জায়গায় জখম হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিবির নেতা নাজমুল বলেন, আমাকে সেদিন রাত ১০টা থেকে নির্যাতন করা শুরু করে। আমার ১২টার পর আর কোনো হুঁশ ছিল না। রাত সাড়ে ৩টার দিকে আমি নিজেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে পাই। এক্সরে রিপোর্টে দেখি আমার বাম পা ও হাত ভেঙে গেছে। আমাকে হল প্রশাসন থেকে বাঁচানোর জন্য কোনো চেষ্টা করা হয়নি। আমি এরপর আর কোনো ক্লাস করতে পারিনি। পরে অনেক অনুরোধ করে শুধু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। আমি শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম বলেই আমাকে এমন নির্যাতন করা হয়েছে।

মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- বরিকুল ইসলাম বাঁধন, সজীব হোসেন, সানাউল্লাহ সূর্য, আবু জাফর সোহাগ, সবুজ রেজা, রাকিব হাসান, নাহিদ উকিল জুয়েল, মুনতাসির বিল্লাহ, আল আমিন, শাকিল, আসিফ আলম, রাইয়ান কামাল, আব্দুল কাদের, মৃধা মো. জাহিদুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান পলাশ, আল আমিন, আরিফুল ইসলাম, শেখ জামি, ইরফান চৌধুরী, তানভির আহমেদ শাওন, মুসা, ফয়সাল, রবিউল, আসিফ, তুষার, হাসান।

এজাহারে উল্লেখ করা আসামিরা বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাকর্মী। এছাড়াও মামলায় তৎকালীন হলের প্রভোস্ট গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মফিজুর রহমানসহ তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক এ এম আমজাদকে আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, মামলা হয়েছে‌। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।

এমএইচএ/এমআইএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।