‘যান্ত্রিক যুগে পিঠার ঐতিহ্য ম্লান হয়ে আসছে’

বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ পিঠা। শীত এলেই ঘরে ঘরে শুরু হতো পিঠা উৎসব। তবে আধুনিক নগর সংস্কৃতির প্রভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী রকমারি পিঠা। তাই বাঙালির ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) প্রথমবারের মতো পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক মাঠে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শরিফা সালোয়া ডিনা। এ উৎসব চলছে রাত ৮টা পর্যন্ত।
উপ-উপাচার্য বলেন, পিঠাপুলি আমাদের গ্রাম বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য। আধুনিক যান্ত্রিক যুগে এসে পিঠার ঐতিহ্য ক্রমশ ম্লান হয়ে আসছে। পিঠা উৎসবের মতো দেশীয় সংস্কৃতি চর্চায় অংশ নিয়ে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।
আরও পড়ুন: শীত উৎসবে ক্যাম্পাস মাতিয়েছে ‘টঙের গান’
বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মজিব উদ্দিন আহমদ বলেন, পিঠা উৎসব আমাদের আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি। এ ধরনের আয়োজন পারস্পরিক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে সুদৃঢ় করে।
এসময় আমন্ত্রিত অতিথিরা বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। শীতকালীন পিঠা উৎসবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের অন্তত ৩০টি স্টল বসানো হয়। এ সব স্টলে রকমারি পিঠার পসরা সাজিয়ে রাখা হয়। এসব পিঠার মধ্যে পাটিসাপটা, পুলি, পাতা পিঠা, নারকেল পিঠা, ভাপা পিঠা, দুধপুলি, মালপোয়া, ফুল পিঠা, জামাই পিঠা, বাঁধাকপির পাকোড়া, ঝিনুক পিঠা, রসপুলি উল্লেখযোগ্য।
উদ্বোধনের পর থেকে প্রতিটি স্টলেই ছিল শিক্ষার্থীদের ভিড়। দেশীয় সংস্কৃতিকে ধারণ করা এই পিঠা উৎসবে এসে তারা বিভিন্ন স্বাদের পিঠা উপভোগ করেন। পিঠার স্বাদ উপভোগের পাশাপাশি দর্শনার্থীদের জন্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজনও করা হয়।
আরও পড়ুন: ২৯২ আসন ফাঁকা রেখেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু
পিঠা উৎসবে আসা ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তামিম বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধারণ এবং সম্প্রীতির মেলবন্ধনকে অটুক রাখতেই এ আয়োজন। আমরা আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতি বছর এ আয়োজন অব্যাহত রাখবে।
পিঠা উৎসবে আসা ম্যানেজমেন্ট বিভাগের নিশাত বলেন, এ শীতে মায়ের হাতের পিঠা খুব মিস করছি। ক্যাম্পাসে বসে শীতের পিঠা উৎসবের আয়োজন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া কবির শশী বলেন, পিঠা উৎসব মানে মিলনমেলা।পরীক্ষার কারণে বাড়িতে যাওয়া হয়নি। তাই এ উৎসবে আমি আমার পছন্দের পিঠা খাওয়ার জন্য এসেছি। যত প্রকার বাহারি পিঠার দেখলাম যেগুলোর নাম এর আগে শুনিনি।
আরও পড়ুন: বাঁধনের নতুন সভাপতি নাহিদ, সম্পাদক রাকিবুল
পিঠা উৎসবে প্রত্যেক স্টল পরিদর্শন শেষে বেরোবি প্রক্টর গোলাম রব্বানী বলেন, এ পিঠা উৎসব আমাদের শিক্ষার্থীরা উপভোগ করছে। আগামীতে আমরা দুই-তিনদিন ব্যাপী এ উৎসব করবো।
জেএস/এমএস